রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত - রমজান মাসের আমল

প্রিয় পাঠক আপনি কি রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানার জন্য আগ্রহী তাহলে আজকের এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে রমজান মাসের আমল গুলো সম্পর্কেও বিস্তারিত জেনে নিন।

Romadan

আপনারা অনেকের রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। যদিও কিছু ধারনা থেকে থাকে তা হয়তো ভুল অথবা পূর্ণাঙ্গ ঈমানের জন্য তা পরিপূর্ণ নয়। আজকে আমি আপনাদের মাঝে রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে  বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবো। যা পাঠ করে আপনি রমজান মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা লাভ করতে পারবে। তার সাথে সাথে রমজান মাসের সকল আমল সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং তা পালন করে আল্লাহ তায়ালার প্রতি ঈমান আনতে পারবেন। আশা করি আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়বেন। চলুন শুরু করা যাক।

সূচিপত্রঃ রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত এবং রমজান মাসের আমল

রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত

রহমতের মাস রমজান, মাগফিরাতের মাস রমজান, নাজাতের মাস রমজান। তাই মাস আমাদের সবার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। এই মাস সকল মুসলিমদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস।এই মাস মানুষকে পরিবর্তন করে। খারাপ কাজ থেকে বের হতে সাহায্য করে। মানুষকে খারাপ কাজ হতে বিরত রাখে।

সবাই এই কামনা করেন যেনো নিজেকে সকল প্রকার পাপ কাজ থেকে বিরত রাখতে পারে। রমজান একটি আরবি শব্দ।ইসলামের মৌলিক পাঁচটি বিধান এর মধ্যে একটি হচ্ছে রোজা। রোজা শুধু আমাদের জন্যই নয় এটি আমাদের পূর্ববর্তী নবী রাসুলের উম্মতের জন্য অবশ্য পালনীয়  কর্তব্য ছিল। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

অর্থাৎ,হে ঈমানদারগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যাতে তোমরা পরহেজগার হতে পারো।(সূরা বাকারাহ-১৮৩)

আরো পড়ুনঃ সাওম বা রমজান পালন সম্পর্কিত সেরা ১০ টি হাদিস

রমজান মাসের গুরুত্ব এতটাই যে এই মাসে আমাদের পবিত্র আল-কোরআন নাজিল হয়েছিল। রমজান মাসে রোজার গুরুত্ব রয়েছে, এই রোজার গুরুত্ব সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা বলেছেন রোজা একান্তই আমার জন্য আর আমি এর প্রতিদান দেবো।

আল্লাহ তায়ালা পরকালে যে পুরস্কার দেবেন তার কিছুটা ইঙ্গিত হযরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদের বলে গেছেন। তিনি বলেছেন রমজান হচ্ছে এমন একটি মাস যে মাসে আল্লাহ তোমাদের জন্য রোজা রাখাকে ফরজ করেছেন। অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় রোজা রাখবে তার জন্য আল্লাহ তায়ালা সকল গুনাহ থেকে মুক্তি দিয়ে নিষ্পাপ শিশুর মত করে দেবেন।

আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন যে, রমজান মাস হচ্ছে দয়ার মাস, রমজান মাস হচ্ছে কল্যাণের মাস, রমজান মাস হচ্ছে ক্ষমার মাস। এই মাস মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠ একটি মাস। এই মাসের রাত সেরা রাত, এই মাসের দিন সেরা দিন, এবং প্রতি মুহূর্ত অত্যন্ত মূল্যবান। এ মাস রহমতের মাস,মাগফিরাতের মাস,নাজাতের মাস। তিনি তোমাদেরকে আল্লাহর দরখাস্তের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।

এই মাসে আল্লাহর গুনোগান বা জিকরের সমতুল্য প্রতিটি নিঃশ্বাসের জন্য। এ মাসে তোমাদের প্রার্থনা বা দোয়া গুলো কবুল করা হবে। তাই মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে পবিত্রতার সহিত প্রার্থনা করো যে তিনি যেন তোমাদের কে রোজা রাখার এবং কোরআন তেলাওয়াত তৌফিক দান করেন। তোমরা গুনাহ করেছ গুনার জন্য অনুতপ্ত হয়ে তওবা করো নামাজের সময় মোনাজাতে হাত উপরে তোলে আল্লাহর কাছে মাফ চাও, কারণ নামাজের সময় দোয়া কবুলের শ্রেষ্ঠ সময়। এই সময় তিনি তার বান্দাদের দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকান এ সময় কেউ কিছু চাইলে তিনি তা দান করে দেন। এ সময় আল্লাহ তায়ালাকে যিনি ডাকেন তার ডাকে জবাব দেন।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন যে, যারা এই রমজান মাসে নিজ ব্যবহার ও আচরণ সুন্দর করবেন তারা সহজেই পুলসিরাত পার করতে পারবেন। যারা এই পবিত্র রমজান মাসে মানুষদেরকে বিরক্ত করা বা কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকবে তাদেরকে কি আমাদের দিন আল্লাহ নিজ হাতে ক্ষমা করে দেবেন। যারা পবিত্র রমজান মাসে আত্মীয়স্বজনের সাথে ভালো ব্যবহার করবে ও তাদের সাথে খুব সুন্দর ভাবে সম্পর্ক রাখবে তাদেরকে আল্লাহ রহমতের ধারায় সিক্ত করবেন।

আমাদের বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) রমজানের ফজিলত সম্পর্কে বলেছেন,এই মাসে যারা নফল নামাজ আদায় করবেন আল্লাহ তাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি করে দেবেন। যারা একটি ফরজ নামাজ আদায় করবেন তাদেরকে অন্য মাসের ৭০ টি ওয়াজিব নামাজ আদায়ের সব দান করে দেবেন। আর যারা রমজান মাসে পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত তেলাওয়াত করবেন তাদেরকে অন্য মাসের সমগ্র কোরআন তেলাওয়াতের সমান পরিমাণ সব দান করবেন। এই মাসের গুরুত্ব এতটাই যে, এই মাসে বেহেস্তের সকল দরজা গুলো খুলে দেওয়া হয়।

আর জাহান্নামের সকল দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। তাই আমরা সকলে রমজান মাসের সকল খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখব। এবং এটি শুধু রমজান মাসে না আমাদের জীবনের সকল মুহূর্তে খারাপ কাজ পরিহার করব। রমজান মাসে বেশি বেশি আমল করব আল্লাহতালা কে ডাকবো এবং নামাজ পড়বো। তাহলে আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট লাভ করতে পারা যাবে। আশা করি আপনি রমজান মাসের ফজিলত গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। চলুন এবার রমজান মাসের আমল সম্পর্কে জেনে নিই।

রমজান মাসের আমল

রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানা হলে রমজান মাসের আমল সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন রমজান মাসের আমল সম্পর্কে জেনে নিই। রমজান মাস হচ্ছে আল্লাহ তাআলার একটি বিশেষ নিয়ামত। এই মাসে পবিত্র আল কুরআন নাযিল হয়েছিল। এ মাস রহমতের মাস, এ মাস মাগফিরাতের মাস, এ মাসুর নাজাতের মাস। এ মাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে যেগুলো পালন করার মাধ্যমে আমরা সবাই জান্নাতে যেতে পারবো।

জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে পারবো। আমল করার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে এ আমল টাকার জন্য নয় এ আমল নেতৃত্ব অর্জনের জন্য নয়, আমল করতে হবে একনিষ্ঠতার সাথে একমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য আল্লাহ তাআলা যে সকল আমলের কথা বলেছে শুধুমাত্র সেই সকল আমল করতে হবে। কোন কিছু বাড়িয়ে বা কমিয়ে করা যাবে না। চলুন রমজান মাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল গুলো জেনে নিই।

রমজান মাসের আমলঃ

১। সিয়াম পালন করাঃ রমজান মাসে সিয়াম পালন করা ফরজ করে দিয়েছেন আল্লাহ তা'আলা। তাই রমজান মাসের প্রধান আমল হচ্ছে সুন্নাহ মোতাবেক সিয়াম পালন করা।

২। সময় মতো সালাত আদায় করাঃ রমজান মাসে যেমন সিয়াম পালন করতে হবে তেমনি সময়মতো সালাত আদায় করতে হবে। সময় মতো সালাত আদায় জান্নাতে যাওয়ার পথ সুগম করে। তাই সময় মতো সালাত আদায় করতে হবে।

৩। সহি ভাবে কোরআন শেখাঃ পবিত্র আল কোরআন রমজান মাসে অবতীর্ণ করা হয়েছে। তাই রমজান মাসে সহি ভাবে কোরআন শেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল।

৪। বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করাঃ সহি ভাবে কোরআন শেখার পর অবশ্যই তা বেশি বেশি করে পড়তে হবে রমজান মাসে। বিশ্বনবী বলেছেন যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পাঠ করে তাকে একটি নেকি প্রদান করা হয় প্রতিটি নাকি দশটি নেকি সমান। রমজান মাসে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করতে হবে।

৫। সেহরি খাওয়াঃ সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে সিয়াম পালন শুরু হয়। সেহরি খাওয়া মধ্যে বরকত রয়েছে। সেহরি হচ্ছে বরকতময় খাবার। তাই সেহরি খেয়ে সিয়াম পালন করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল।

৬। তারাবির নামাজ পড়াঃ রমজান মাসে তারাবি নামাজ পড়া অন্যতম একটি আমল। তারাবি পড়ার মাধ্যমে হক আদায় করতে হয়। যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সহাবের আশায় তারাবির নামাজ আদায় করে আল্লাহতালা তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেন।

৭। শুকরিয়া আদায় করাঃ একজন মানুষের রমজান মাস পাওয়া একটি বিরা সৌভাগ্যের বিষয়। তাই আল্লাহ তায়ালার বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করতে হবে এবং আগামী রমজান পাওয়ার জন্য তৌফিক আদায় করা।

৮। কল্যাণকর কাজ করাঃ অন্য মাসের চেয়ে রমজান মাসে একটি ভালো কাজ করা অনেক বেশি উত্তম কাজ। তাই আমাদের সকলের বেশি বেশি ভালো কাজ করা প্রয়োজন রমজান মাসে।

৯। বেশি করে দান সদকাহ করাঃ আমাদের সকলের উচিত রমজান মাসে বেশি করে দান সদকাহ করা। এতিম গরিব মিসকিনদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া। তার কারণ আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ(সা.) বেশি বেশি দান খয়রাত করতেন।

১০। উত্তম চরিত্র গঠন করাঃ রমজান মাসে আমাদের সকলের চরিত্র উত্তম করতে হবে। সকলের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে। কারো সাথে রাগারাগি করা যাবে না। তাহলে আল্লাহতালা সন্তুষ্ট লাভ করা সম্ভব। যার মাধ্যমে পরকালে জান্নাত লাভ করতে পারা যাবে।

উপরোক্ত ১০ টি গুরুত্ব আমল ছাড়াও অনেক আমল রয়েছে সেগুলো হচ্ছে ইতিকাফ করা, দ্বীনের কাজ করা, বেশি বেশি দোয়া ও কান্নাকাটি করা, ইফতার করা, অন্যকে ইফতার করানো, তওবা ও ইস্তেগফার করা, আল্লাহর জিকির করা, কোরআন বুঝে আমল করা, আত্মীয়তার সম্পর্ক উন্নত করা ইত্যাদি এ সকল আমল গুলো করতে হবে। এসব আমল করার মাধ্যমে আমরা পরকালের জান্নাত লাভ করতে পারব। এতক্ষণে আমরা রমজান মাসের আমল গুলো জানলাম চলেন এবার রোজার ফজিলত ও গুরুত্ব জেনে নিই।

রোজার ফজিলত ও গুরুত্ব

ইসলাম ধর্মের একটি অন্যতম স্তম্ভ হচ্ছে রোজা।রোজা হচ্ছে ফারসি শব্দ। আরবিতে বলা হয় সাওম বা সিয়াম। এর অর্থ হচ্ছে বিরত থাকা, সংযত থাকা ইত্যাদি। আল্লাহতালার কাছে নিয়ত করে সুবেহ সাদেক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার,পাপাচার থেকে নিজেকে বিরত থাকার নাম রোজা,রমজানের শ্রেষ্ঠ আমল রোজা এমন একটি ইবাদত যা একজন রোজাদারকে লোভ,মোহ,ক্রোধ,কাম ইত্যাদি রিপু থেকে রক্ষা করে। রোজা একজন মানুষকে ঈমানদার করে তোলে।

আরো পড়ুনঃ তারাবির নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে

যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত সওয়াবের নিয়ত করে রমজান মাসে রোজা রাখে আল্লাহ তা'আলা তাঁর পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেন। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে একদিন রোজা রাখবে আল্লাহ তা'আলা তার ও জাহান্নামের মাঝে একটি পরিখা তৈরি করে দেন। যার দূরত্ব আকাশ ও জমিনের দূরত্বের সমান। (তিরমিজি-১৬২৪) আসুন আমরা সকলে রোজার গুরুত্ব বুঝে রোজা পালন করি।

রমজানের শ্রেষ্ঠ আমল

রমজান মাসে এমন একটি মাসে যে মাসে আমাদের পবিত্র আল কুরআন নাযিল করা হয়েছিল। রমজান মাসে অনেক আমল রয়েছে তার মধ্যে কিছু শ্রেষ্ঠ আমল বা সর্বোত্তম আমল আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে রমজানের শ্রেষ্ঠ আমল গুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা লাভ করতে পারবেন।

১। রোজা রাখাঃ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি হচ্ছে রোজা। মহান আল্লাহ তায়ালা রমজান মাসে আমাদের উপর রোজা ফরজ করেছেন। রমজান মাসে গুরুত্ব এতটাই যে মহান আল্লাহতালা এর পুরস্কার নিজ হাতেই দেবেন। তাই আমাদের সকলকে রোজা রাখতে হবে সম্পূর্ণ ঈমানের সহিত। এ রোজার মাধ্যমে আমরা জান্নাতে যেতে পারবো এবং জাহান্নাম থেকে মুক্ত হতে পারব। রোজার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় বান্দাদের পাপ মুক্ত করে দেন। আমাদের প্রিয় নবী বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত নেকীর আশায় রোজা পালন করবে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।(সহিহ বুখারী, হাদিস:৩৮)

২। জিকির করাঃ জিকির হচ্ছে আল্লাহকে স্মরণ করা। যেকোনো ভালো ই বাজাতে আল্লাহ তালাকে স্মরণ করতে হবে জিকির করার মাধ্যমে। আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয় তার কোন শরিক নেই। সুতরাং আল্লাহ তাআলার জন্যই ইবাদত করতে হবে ও আল্লাহকে স্মরণ করে নামাজ কায়েম করতে হবে। তাই রমজান মাসে বেশি বেশি জিকির আদায় করতে হবে।

৩। দোয়া করাঃ রমজান মাসে মহান আল্লাহতালা বেশি দোয়া কবুল করেন। আল্লাহ তাআলার উপর ঈমান এনে,আল্লাহ কে বিশ্বাস করা যে মহান আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন সবাই তার মুখাপেক্ষী। তিনি মহাশক্তির অধিকারী। এ আকাশ এ পৃথিবীর তার আওতাধীন। এটার উপর বিশ্বাস রেখে আল্লাহতালার কাছে দোয়া করতে হবে তাহলে আল্লাহ তাআলা সে দোয়া কবুল করবেন। রমজান মাসে আমরা সবাই আল্লাহতালার কাছে বেশি বেশি দোয়া করব যেন আল্লাহ তাআলা তা কবুল করেন।

৪। নামাজ আদায় করাঃ আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্ট ও নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো সময়মতো জামাতের সহিত সালাত আদায় করা। রমজান মাসে সময় মত ফরজ সালাত ও তারাবির নামাজ আদায় করতে হবে। চেষ্টা করতে হবে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা। সকল ফরজ নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা। সময় মত সালাত আদায় করে মোনাজাতে আল্লাহর কাছে দোয়া বা প্রার্থনা করতে হবে যেন আল্লাহতালা তা পূরণ করেন।

৫। কোরআন তেলাওয়াতঃ রমজান মাস যেহেতু কোরআন নাজিলের মাস। তাই এই মাসে বেশি বেশি কোরআন তেলোয়াত করতে হবে। কোরআনের একটি হরফ পড়ার মাধ্যমে অন্য মাসের পুরো কোরআন পড়ার মতো সব আল্লাহতালা দিয়ে থাকেন। তাই আমাদের সকলের উচিত রমজান মাসে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা।

উপরোক্ত পাঁচটি আমল ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি আমল রয়েছে যা আমাদেরকে পালন করতে হবে। তা হলো যাকাত দেওয়া, সদকা করা, আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখা, লাইলাতুল কদরের ইবাদত করা, ইতিকাফ করা, সামর্থ্য থাকলে রমজানে ওমরা করা ইত্যাদি আমল গুলো পালন করতে হবে। 

রমজান মাসে করণীয় 

আশা করি রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বলতে গিয়ে রমজান মাসে করণীয় সম্পর্কে আপনার ধারণা হয়ে গেছে।আমি উপরোক্ত আলোচনাগুলোতে রমজান মাসের করণীয় সম্পর্কে বলে দিয়েছি প্রায়ই। তারপরও আরো একবার রমজান মাসের করণীয় গুলো সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরা হলো।

আরো পড়ুনঃ রমজান মাসের ফজিলত এবং রমজান মাসের দোয়া সমূহ

যেমন সেহরি খাওয়া, তারাবির নামাজ পড়া, ভালো কাজ বেশি বেশি করা, বেশি বেশি সদকা করা, ইতিকাফ করা, সমর্থ্য থাকলে ওমরা করা, লাইলাতুল কদর তালাশ করা, দোয়া বেশি বেশি করা, অন্যকে ইফতার করানো, সকলের সাথে ভালো ব্যবহার করা, কারো সাথে রাগারাগ থাকলে তার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা, নামাজ আদায় করা, জামাতের সাথে নামাজ আদায় করা ইত্যাদি বিষয়গুলো রমজান মাসে করতে হবে।

শেষ কথা-রমজান মাসের গুরুত্ব

এতক্ষণ যে পোস্টটি পড়ছিলেন সেই পোস্টটি ছিল রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে এমনকি এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে রমজান মাসের আমলগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আশা করছি পোষ্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্যগুলো পেয়েছেন এমনকি রমজান মাসের গুরুত্ব ফজিলত গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এখন যদি আপনার কাছে মনে হয়ে থাকে আমরা আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রয়োজনের সমস্ত তথ্যগুলো উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে তাহলে অবশ্যই আমাদের এই পোস্টের নিচে একটি মন্তব্য করে যাবেন কারণ আপনার একটি মন্তব্য আমাদের পোস্ট লেখার আগ্রহ কয়েকজন বৃদ্ধি করে দেয়। আপনি চাইলে আমাদের এই পোস্টটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন কারণ তারা এ পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে রমজান মাসের গুরুত্ব ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারবে। এছাড়াও এই সম্পর্কে তারও পোস্ট করতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url