বিকাশ পিন ভুলে গেলে করণীয় কি
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলটি যারা বিকাশ পিন ভুলে গিয়ে কি করবেন ভাবছেন তাদের জন্য। কারণ এই পোস্টটি বিকাশের পিন ভুলে গেলে আপনার করণীয় কি হবে সেই সম্পর্কে।
এমনকি এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনার বিকাশ পিন লক হওয়ার কারণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এবং আপনার সেই বিকাশের পেইন্টে কিভাবে আপনি রিসেট করবেন সেই সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য এই পোস্টটির মধ্যে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাই আমাদের এই সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং ভুলে গেলে করণীয় কি হবে।
সূচিপত্রঃ বিকাশ পিন ভুলে গেলে করণীয় কি তা জেনে নিন
- বিকাশ পিন কি
- বিকাশ পিন লক হওয়ার কারণ
- বিকাশ পিন লক হলে কি করণীয়
- বিকাশ পিন ভুলে গেলে করণীয়
- বিকাশ পিন রিসেট করার নিয়ম
- বিকাশ পিন সেট করার নিয়ম
- বিকাশ পিন সেট করার কিছু নির্দেশনাবলি
- শেষ কথা
বিকাশ পিন কি
বিকাশ পিন ভুলে গেলে করণীয় সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই পিন সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। তাই প্রথমেই বলি পিন হচ্ছে সিকিউরিটি কোড। যার মাধ্যমে ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। Personal Identification Number এর সংক্ষিপ্ত রূপকে সংক্ষেপে PIN বলা হয়। যার বাংলা হচ্ছে ব্যক্তিগত সনাক্তকরণ সংখ্যা। পিন সাধারণত কয়েকটি সংখ্যার মাধ্যমে তৈরি করতে হয়। যার দ্বারা কোনো গোপন বা ব্যক্তিগত সাইট গুলোতে প্রবেশ করা যায়। প্রবেশ করার সময় পিন প্রদান করে প্রবেশ করতে হয়।
আরো পড়ুনঃ বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
একজন ব্যক্তি তার পিন শুধু তিনি জানবেন। অন্য কেউ জানলে বা জানালে তারা নিরাপত্তা দুর্বল হয়ে যাবে। বিকাশের ক্ষেত্রেও একটি পার্সোনাল আইডেন্টিফিকেশনস নাম্বার বা পিন রয়েছে যা বিকাশ পিন নামে পরিচিত। বিকাশ ব্যবহারকারী সকল গ্রাহকরা একাউন্ট খোলার সময় একটি পিন বাঁধন লোক সেট করেন। বিকাশের যে কোন সার্ভিস ব্যবহারের সময় এই বিকাশ পিন এর প্রয়োজন হয়। তাই পিন ব্যবহারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। চলুন বিকাশ পিন সংক্রান্ত সকল সমস্যার সমাধান দেখে নেই।
বিকাশ পিন লক হওয়ার কারণ
বিকাশ পিন লক হওয়ার কারণ হচ্ছে,কোন আপনি যদি বিকাশ পিন ভুলে যান এবং ভুলে যাওয়ার পরেও পর পর তিনবার ভুল পিন দিয়ে বিকাশের ঢুকার জন্য চেষ্টা করেন তাহলে আপনার বিকাশ পিন লক হয়ে যাবে। আপনি ভাবতে পারেন পরপর তিনবার চেষ্টা করার পর কেন তা লক হয়ে যায়। আসলে এর কারণ হচ্ছে আপনি ব্যতীত অন্য কেউ যদি আপনার টাকা উঠানোর চেষ্টা করতে না পারে সেই জন্য এই সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিকাশ।
এই বিকাশ পিন বিকাশের সকল সেবা গ্রহণের সময় প্রয়োজন হয়। ক্যাশ আউট থেকে
শুরু করে সেন্ড মানি,রিচার্জ, পিন রিসেট ইত্যাদি সকল কাজে বিকাশ
পিন প্রয়োজন। বিকাশে প্রবেশের সময় তিন তো অবশ্যই প্রয়োজন হয়। চলুন বিকাশ পিন
লক হলে কি করণীয় তা জেনে নিই।
বিকাশ পিন লক হলে কি করণীয়
বিকাশ পিন লক হলে কি করনীয় তা জানার আগে,বিকাশ পিন যেন লক না হয় সেদিকে
সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিকাশ পিন লক হলে আপনাকে বিকাশ পিন রিসেট করতে হবে।
পিন রিসেট করার কিছু নিয়ম নিচে উল্লেখ করা হলো। বিকাশ পিন রিসেট করার নিয়ম
জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি করতে হবে। চলুন সকল ধাপ গুলো জেনে নিই।
বিকাশ পিন ভুলে গেলে করণীয়
বিকাশ পিন ভুলে গেলে করণীয় গুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছি। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আপনি আপনার সমস্যা সমাধান করতে পারবেন। বিকাশের আগে বিকাশ পিন ভুলে গেলে করণীয় ছিল বিকাশ হেল্পলাইনে কল করে সমস্যার সমাধান করা। বিকাশের হেল্পলাইন নাম্বর হচ্ছে ১৬২৪৭। আগে এই নাম্বারে কল করে বিকাশ জনিত সকল সমস্যার সমাধান করা হতো। হেল্প লাইনে কল করে বিকাশ পিন সেট করার জন্য গ্রাহকদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হতো।
আরো পড়ুনঃ বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনে নিন
তাই বিকাশ গ্রাহকদের ভোগান্তি দূর করার জন্য পিন রিসেট নিয়ে এসেছে বিকাশ। এ
পদ্ধতির মাধ্যমে গ্রাহক কিছু তথ্য দিয়ে খুব সহজে পিন রিসেট করতে পারবে। তিনটি
ধাপ অনুসরণ করে পিএনজি সেট করা যেতো। এখনো করা যায় কিন্তু পিন রিসেট
পদ্ধতিতে আসার পরে প্রায় সবাই এখন পিন রিসেট পদ্ধতি অবলম্বন করে।
তিনটি ধাপ অনুসরণ করে পিন রিসেট করতে পারবেন
১। ১৬২৪৭ নম্বরে কল করুন
২। কাস্টমার সার্ভিস প্রতিনিধি যিনি আছেন তাকে কিছু তথ্য দিয়ে আপনি তার মালিক কিনা তা প্রমাণ করতে হবে। আপনি যদি মালিকানা প্রমাণ করতে পারেন,তাহলে তারা পিন রিসেটের এসএমএস পাঠাবে।
৩। আপনার ফোনে পিন রিসেট এর এসএমএস আসার পরে *২৪৭# ডায়াল করে নিজের ইচ্ছামত পিন বসিয়ে রিসেট করতে হবে। বর্তমানে কাস্টমার কেয়ারে ফোন না দিয়ে পিন রিসেটের মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে পিন রিসেট করতে পারবেন। চলুন জেনে নিয়ে বিকাশ পিন রিসেট করার নিয়ম।
বিকাশ পিন রিসেট করার নিয়ম
বিকাশ পিন ভুলে গেলে করণীয় সম্পর্কে জানতে হলে বিকাশ পিন রিসেট সম্পর্কে জানতে হবে।বিকাশ পিন রিসেট করার নিয়ম হচ্ছে আপনার বিকাশ একাউন্ট যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র (NID),পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহার করে খুলেন তাহলে আপনি নিজেই আপনার বিকাশ ফ্রেন্ড রিসেট করতে পারবেন। বিকাশ পিন রিসেট করার জন্য আপনার ভোটার আইডি কার্ড যে নামে বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়েছিল সেই ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার এবং তার জন্ম তারিখ প্রয়োজন হবে।
এবং আপনার সর্বশেষ লেনদেন কি ছিল তা বিকাশ পিন রিসেট করার সময় প্রদান করতে
হবে। যদি আপনি কোন কারনে ৯০ দিনের মধ্যে লেনদেন না করে থাকেন সে ক্ষেত্রে
লেনদেনের তথ্য না দিলেও হবে। আপনাদের বোঝার ক্ষেত্রে বিকাশ পিন রিসেট
করার নিয়ম Step By Step দেখানো হলো। তার সাথে সাথে স্ক্রিনশট শেয়ার করা
হলো।
Step-1 বিকাশ পিন ভুলে গেলে বা লক হয়ে গেলে আপনার পিন রিসেট করার জন্য প্রথমে আপনার একটিভ বিকাশ নাম্বার থেকে *২৪৭# বিকাশ ডায়াল কোড টি ডায়াল করুন।
Step-2 তারপরে বিকাশ মেনু লিস্ট দেখতে পাবেন। বিকাশ মেনু লিস্ট থেকে নাম্বার 10 এ থাকা রিসেট পিন (Reset PIN) অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে।
Step-3 এবার বিকাশ মেনু বারে আপনার বিকাশ রেজিস্ট্রেশন NID/Passport/Driving License দিতে বলবে। আপনি বিকাশ খোলার সময় যে NID/Passport/Driving License দিয়ে খুলেছিলেন সেটি বসিয়ে দিতে হবে। আপনি যদি পুরনো আইডি কার্ড দ্বারা একাউন্ট খুলে থাকেন তাহলে পুরনো আইডি কার্ড নম্বরটি দিতে হবে। আপনার NID/Passport/Driving License নাম্বার দেওয়ার পরে সেন্ড বাটনে ক্লিক করতে হবে।
Step-4 এবার আপনার মোবাইল স্ক্রিনে (Enter The 4 Digits Of Your Birth Year) অপশন আসবে। তারপর সেখানে আপনার NID/Passport/Driving License অনুযায়ী আপনার জন্মসাল বসিয়ে সেন্ট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
Step-5 এবার সর্বশেষ ৯০ দিনের মধ্যে আপনি যে সার্ভিসটি ব্যবহার করেছেন তা সিলেক্ট করে সেন্ড বাটনে ক্লিক করুন।
Step-6 তারপর সর্বশেষ বিকাশ থেকে আপনার লেনদেন এর টাকার পরিমান বসিয়ে দেওয়ার পরে সেন্ড বাটনে ক্লিক করতে হবে।
বি:দ্র: আপনি যদি শেষ ৯০ দিনে কোন সার্ভিস না গ্রহণ করে থাকেন তাহলে ৭ নম্বরে থাকা( No Transaction) সিলেক্ট করে সেন্ড বাটনে ক্লিক করলে ফিরতি এসএমএস এ আপনাকে পিন রিসেট করার জন্য একটি টেম্পোরারি পিন দেওয়া হবে।
উপরের তথ্যগুলো যদি আপনি সঠিক দিয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে একটি ফিরতি এসএমএস দেওয়া হবে। এসএমএসে আপনাকে একটি টেম্পোরারি পিন দেওয়া হবে।
আরো পড়ুনঃ বিকাশ ক্যাশ আউট চার্জ কতো জেনে নিন
বি:দ্র: আপনি যদি উপরে দেওয়া তথ্যগুলো কোন কারণবশত ভুল দিয়ে থাকেন তাহলে বিকাশ থেকে আপনাকে একটি মেসেজ সেন্ড করা হবে। সেখানে লেখা থাকবে আপনার পিন রিসেট রিকুয়েস্ট বাতিল হয়েছে সঠিক তথ্য দিয়ে আবার চেষ্টা করুন। তাই আপনাকে উপরের তথ্যগুলো সম্পূর্ণ সঠিক দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে ঠিকভাবে আপনার ভুলে যাওয়া পিন রিসেট করতে পারবেন।
আশা করি উপরের বিষয়গুলো আপনি বুঝতে পেরেছেন যদি না বুঝতে পারেন তাহলে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। আপনি যদি উপরের বিষয়গুলো ঠিকঠাক ভাবে করে থাকেন তাহলে বিকাশ পিন ভুলে গেলে করণীয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ জানতে পেরেছেন। আপনাকে এবার পিন সেট করতে হবে। এবার বিকাশ পিন সেট করার নিয়ম টি জেনে নিন।
বিকাশ পিন সেট করার নিয়ম
- প্রথমে আপনার একটিভ একাউন্ট থেকে *২৪৭# ডায়াল করতে হবে।
- আপনি যদি আপনার পিন রিসেট সঠিকভাবে করতে পারেন তাহলে উপরের কোটি ডায়াল করার পর মেনু বারে একটু অপশন দেখতে পাবেন সেখানে লেখা থাকবে (1.Active Your Bkash Pin). সেখান থেকে এক নম্বর সিলেক্ট করে আপনার ফোনে ফিরতি SMS এর মাধ্যমে দেওয়া টেম্পোরারি পিন টি দিতে হবে।
- এবার আপনার ইচ্ছামত পাঁচটি অগুছালো সংখ্যা দিয়ে পিন তৈরি করুন (যেমন ২৫৮৯৬,৮৭৫৯৩) এভাবে পাঁচটি সংখ্যা দিতে হবে।
- প্রথমের দেওয়া পিন টি আবার দিতে হবে। আপনি পরপর দুইবার যদি একই পিন দিয়ে থাকেন তাহলে আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন সফলভাবে পরিবর্তন করতে পারবেন। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন। বিকাশ পিন সেট করার কিছু নির্দেশনা বলি রয়েছে তাহলে এবার জেনে নিন।
বিকাশ পিন সেট করার কিছু নির্দেশনাবলি
- আপনার নতুন বিকাশ পিন অবশ্যই পাঁচ ডিজিটের দিতে হবে।
- বিকাশ পেন হিসাবে শুধু সংখ্যা ব্যবহার করতে হবে।
- নতুন পিন সেট করতে হলে অবশ্যই সর্বশেষ ব্যবহৃত তিনটি পিন এর মধ্যে কোনটি ব্যবহার করা যাবে না।
- ৮ ঘন্টার মধ্যে পরপর দুইবার বিকাশের পিন পরিবর্তন করতে পারবেন না।
- পাঁচ ডিজিটের সংখ্যার মধ্যে প্রথম সংখ্যাটি ০ দেওয়া যাবে না।
- ধারাবাহিকভাবে বা একই ডিজিট বা সংখ্যা পরপর দেওয়া যাবে না যেমনঃ ৯১১১১১,৫৫৫৫৫,১২৩৪৫,৫৪৩২১ এভাবে ব্যবহার করতে পারবেন না)
শেষ কথা
এতক্ষণ যে পোস্টটি পড়ছিলেন সেই পোস্টটি ছিল বিকাশের পিন ভুলে গেলে আপনার করণীয় কি হবে এই সম্পর্কে। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে বিকাশ সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য এবং বিকাশের পিন ভুলার পর আপনার করনীয়তা কি হবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে গেছেন। এমনকি এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে বিকাশ সম্পর্কে আপনার অজানা তথ্যগুলো বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন।
এখন আপনার কাছে যদি মনে হয়ে থাকে আপনার প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্যগুলো আমাদের এই পোষ্টের মধ্যে সংযুক্ত করতে পেরেছি তাহলে অবশ্যই আমাদের এই পোস্টটির নিচে একটি মন্তব্য করে যাবেন। কারন আপনার একটি মন্তব্য আমাদের পোস্ট লেখার আগ্রহ কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে দেয়। এমন কি আপনি চাইলে আমাদের এই পোস্টটি আপনার ফেসবুক আইডি অথবা আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন কারণ আপনার বন্ধু এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে বিকাশের পিন ভুলে গেলে করণীয় কি হবে সেই সম্পর্ক জানতে পারবে। এছাড়াও এই সম্পর্কিত আরো পোস্ট করতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url