কাঠবাদামের ৬০টি অসাধারণ উপকারিতা

প্রিয় পাঠক যারা কাঠবাদাম সম্পর্কে জানেন না তারা আজকের এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন।

Peanut

কারণ আমরা এই পোষ্টের মধ্যে কাঠবাদামের ৬০টি অসাধারণ উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। এই ৬০ টি উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারলে আপনি কাঠবাদামের ওপর বিস্তারিত একটি ধারণা পেয়ে যাবেন। এমনকি কাঠবাদামটি আপনি রেগুলার খাওয়া শুরু করবেন। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং জানুন কাঠ বাদামের অসাধারণ উপকারিতা সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ কাঠবাদামের ৬০টি অসাধারণ উপকারিতা

কাঠবাদামের ৬০টি অসাধারণ উপকারিতা

আপনি যদি জানেন কাঠবাদামের উপকারিতা সম্পর্কে তাহলে আপনি অবশ্যই রেগুলার কাঠবাদামের স্বাদ গ্রহণ করবেন। কারণ এটি একটি অসাধারণ খাবার এই খাবারটি যে গ্রহণ করেছে পেয়ে সারা জীবন সুস্থ থেকেছে। এই কাঠবাদামের অনেক ধরনের গুনাগুন রয়েছে আর এই গুণাগুণ গুলো আপনি আমাদের এই পোস্টটি সম্পন্ন করার মাধ্যমেই বুঝতে পারবেন। তাই আমাদের লেখা বা ডাক্তারের পরামর্শ বা রিসার্চ এর ফলে এই ৬০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছি এবং আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক কাঠবাদামের অসাধারণ উপকারিতা গুলো সম্পর্কে।

১। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে কাঠবাদাম। কাঠবাদাম রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখার মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

২। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় কাঠবাদাম, কাঠ বাদামের পুষ্টি উপাদান গুলি বিভিন্ন উপায়ে হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে। এতে রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল দূর করে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে থাকে যা হার্টের জন্য খুবই উপকারী।

আরো পড়ুনঃ মধু খাওয়ার উপকারিতা এবং মধু খাওয়ার নিয়ম

৩। ওজন কমাতে সাহায্য করে কাঠবাদাম অনেকেই মনে করেন কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে শরীর মোটা হয়ে যায়। কিন্তু এটি ভুল ধারণা, কাঠবাদামে যে চর্বি রয়েছে তা অবশ্যই স্বাস্থ্যকর চর্বি এটি সঠিক পরিমাণে খাওয়ার ফলে ওজন কমতে সাহায্য করে। কারণ কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত ক্ষুধা অনুভব হয় না। এর ফলে অল্প খাবার খেয়েই থাকা যায়।

৪। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় কাঠবাদাম, কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে থাকে। কাঠবাদামে থাকা পুষ্টিগুণ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

৫। কাঠবাদাম স্ট্রোক প্রতিরোধেও সাহায্য করে, স্ট্রোক বিভিন্ন রকম কারণে হয়ে থাকে। তবে অনেকের ওজন বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। আর এই কাঠবাদাম উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজন, এ সমস্ত সমস্যাই বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

৬। কাঠবাদামের অসাধারণ ৪০ টি উপকারিতা, কাঠবাদাম হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিতভাবে কাঠবাদাম খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।

৭। আমাদের মধ্যে অনেকেরই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়, এই কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করতে সাহায্য করে কাঠবাদাম। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে থাকে।

৮। কাঠবাদাম শরীরের হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে, কারণ কাঠ বাদামে রয়েছে প্রোটিন, মিনারেল, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, জিংক ইত্যাদি যা হাড়ের গঠনে সহায়তা করে।

৯। কাঠবাদাম শরীরের হাড় মজবুত করার পাশাপাশি দাঁতের সুরক্ষায় খুবই কার্যকর। কাঠবাদামে থাকা ফসফরাস দাঁত মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

১০। কাঠবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, এই আঁশ কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই কোলন ক্যান্সারে থেকে নিজেকে রক্ষা করতে নিয়মিতভাবে কাঠবাদাম খাওয়ার অভ্যাস রাখুন।

১১। আজকাল মেয়েদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে, নিয়মিতভাবে কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। কাঠবাদামে থাকা ভিটামিন-ই, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

১২। কাঠবাদাম স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, কারন এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-বি এবং মিনারেলস যা মস্তিষ্কের কোষগুলোকে শক্তিশালী করে তোলে।

১৩. স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ কাঠবাদামে থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি এবং মিনারেলস মস্তিষ্কের কোষগুলোকে শক্তিশালী করে স্মৃতিশক্তি প্রখর করে তোলে। এছাড়াও ১ আউন্স পরিমাণ কাঠবাদাম থেকে যে পরিমাণ ভিটামিন ই পাওয়া যায় তা দৈনিক চাহিদার অর্ধেকর বেশি অংশ পূরণ করতে পারে। আর গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত ভিটামিন ই গ্রহণের ফলে Alzheimer’s রোগের ঝুঁকি কমে যায়। (Leech, 2018) উল্লেখ্য Alzheimer’s হলো এমন একধরনের রোগ যেখানে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায় তথা স্মৃতি শক্তি এবং চিন্তা করার সক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।

১৪। ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করেঃ কাঠবাদাম এক ধরণের ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে। এটি মুখের ব্ল্যাক হেডস এবং ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা ময়েশ্চারাইজারের পরিবর্তে কাঠবাদামের তেল ব্যবহার করতে পারেন। (Jain, n.d.)

১৫। ত্বকের স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করেঃ এটি স্ক্রাব হিসেবেও কাজ করে। কাঠবাদামের আধা ভাঙা দানার সঙ্গে মধু ও টক দই মিশিয়ে মুখে আলতো করে ম্যাসাজ করুন। এটি প্রাকৃতিক স্ক্রাবের কাজ করে। ‘ভিটামিন ই’ সমৃদ্ধ এই স্ক্রাব ত্বকের ডেড সেল বা মৃত কোষ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

১৬। ত্বকের বলিরেখা দূর করে বয়সের ছাপ কমায়ঃ কাঠবাদাম ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কাঠবাদামের তেল দিয়ে ত্বক ম্যাসাজ করলে, ত্বকের বলিরেখা কমে যাবে। এছাড়া মধু, লেবু ও কাঠবাদামের তেল একসাথে মিশিয়ে মুখে মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করলে ত্বক হয়ে উঠবে দীপ্তিময় এবং উজ্জ্বল । এভাবে এটি বয়সের ছাপ কমাতে যথেষ্ট কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।

১৭। তারুণ্যের রহস্য হিসেবে কাজ করেঃ এন্টিএজিং (Anti-aging) হিসেবে কাঠবাদাম তেলের তুলনা হয় না। রাতে ঘুমানোর আগে কয়েক ফোঁটা তেল মুখে মেখে ঘুমান এবং সকালে ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত করলে ত্বকের তারুণ্য থাকবে অনেকদিন।

১৮। ত্বক উজ্জ্বল করেঃ কাঠবাদামের তেলে রয়েছে ‘ভিটামিন ই’। ‘ভিটামিন ই’ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা ও সানবার্ন (Sunburn) রোধ করে। নিয়মিত এই তেল দ্বারা ম্যাসাজ করলে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, ফলে ত্বক সতেজ থাকে।

১৯। ত্বক পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করেঃ কাঠবাদামের তেল ত্বক পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। কয়েকটি কাঠ বাদাম ভিজিয়ে রাখুন এবং কিছু সময় পর পেস্ট তৈরি করুন। বাদামের পেস্টের সাথে ১ চামচ মধু এবং ১ চামচ টক দই মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি দিয়ে মুখ কিছু সময় ম্যাসেজ করুন এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত মিশ্রণটি ব্যবহার করলে ত্বক পরিষ্কার থাকবে।

২০। মেকআপ তুলতে সহায়ক হিসেবে কাজ করেঃ কাঠবাদামের তেল মেকআপ তুলতে সাহায্য করে। কিছু পরিমাণ তুলা নিয়ে তা বাদাম তেলে ভিজিয়ে নিন। তুলা দিয়ে হালকা করে তেল মুখে লাগান। অতঃপর টিস্যু অথবা তুলা দিয়ে মুখ মুছে ফেলুন। মুখ থেকে মেকআপ তোলার জন্য আর যুদ্ধ করতে হবেনা বরং খুব সহজেই উঠে যাবে এই ফর্মুলা ব্যবহার করার মাধ্যমে।

২১। ত্বকের দাগ দূর করেঃ ত্বকের দাগ দূর করতে যাদুর মত কাজ করে কাঠবাদামের তেল। হাতের তালুতে তেল নিয়ে বৃত্তাকারে দাগের জায়গাতে তেল লাগান। প্রতিদিন ২ বার তেল ব্যবহার করলে কয়েক দিনের মধ্যে ভাল ফল পাবেন।

২২। চোখের নীচের কালো দাগ দূর করেঃ কাঠবাদামের তেল চোখের নীচে কালো দাগ দূর করে। তাছাড়া কাঠবাদাম বেটে পেস্ট তৈরি করে তা রাতে ঘুমানোর সময় চোখের নিচে ত্বকে দিয়ে ঘুমালে চোখের নীচের কালো দাগ চলে যায় এবং চোখের বলিরেখা ও চোখ ফোলা ভাব কমে যায়। তবে ব্যবহারের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেনো তা চোখের মধ্যে প্রবেশ না করে।

২৩। ত্বক, নখ এবং চুলের যত্নেঃ বাদামের তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই ও বিটা ক্যারোটিন। এন্টি-অক্সিডেন্ট ত্বককে আর্টিফিশিয়াল কেমিক্যাল থেকে রক্ষা করে। কাঠবাদাম বাটা অথবা কাঠবাদামের তেল ত্বকে, চুলে, হাতে এবং নখে নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়ে উঠবে এবং চুল ঝলমলে হবে।

২৪। চুল পড়া রোধে সাহায্য করেঃ চুল পড়া, চুলের রুক্ষতা এবং মাথার ত্বকের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় কাঠবাদামের তেলের জুড়ি নেই। এতে রয়েছে ভিটামিন ডি ও ম্যাগনেসিয়াম যা চুল পড়া রোধ করে এবং মাথার ত্বককে সবল করে তোলে। চুলে সরাসরি এই তেল লাগিয়ে কয়েক ঘণ্টা রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত কিছুদিন ব্যবহার করে নিজেই এর ফলাফল দেখে অবাক হবেন।

২৫। চুল মজবুত ও আকর্ষণীয় করেঃ কাঠবাদামে রয়েছে পলিআনস্যাচুরেটেড অয়েল, ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন এ, ডি, বি-১, বি-২ এবং বি-৬ যা চুলকে মজবুত এবং আকর্ষণীয় করে তোলে। ফ্যাটি এসিড চুলকে প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দেয় এবং চুলকে করে তোলে মসৃণ ও মজবুত।

২৬। দ্রুত চুল লম্বা করতে সাহায্য করেঃ অনেকেই লম্বা চুল পছন্দ করেন কিন্তু চুল ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে চুল লম্বা রাখতে পারেন না। ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে চুল ভেঙ্গে ভেঙে পড়তে থাকে। কাঠবাদামের তেলে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা চুল ভেঙ্গে যাওয়া রোধ করে এবং চুলকে দ্রুত লম্বা হতে সাহায্য করে। নিয়মিত কাঠ বাদামের তেল ব্যবহার এবং সেই সাথে কাঠবাদাম খেলে লম্বা চুলের স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব।

২৭। খুশকি দূর করেঃ শীতকালে অনেকেই খুশকির সমস্যায় ভোগেন। খুশকির কারণে চুল পড়াও বেড়ে যায় এবং ত্বকের নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। কাঠবাদামের তেল ব্যবহারের ফলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সমপরিমাণ কাঠবাদামের তেল এবং নিমের তেল রাতে ঘুমানোর আগে মাথার ত্বকে ভালোভাবে মালিশ করুন। এভাবে সারা রাত রাখুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে শ্যাম্পু করুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে খুশকির সমস্যা দূর হবে।

২৮। কোঁকড়া চুল সোজা করেঃ অনেকেই কোঁকড়া চুল নিয়ে অনেক চিন্তিত। কাঠবাদামের তেল কোঁকড়া চুলকে সোজা করতে সাহায্য করে। কাঠবাদামের তেলে থাকা ‘ভিটামিন ই’ চুলকে মসৃণ করে এবং অনিয়ন্ত্রিত কোঁকড়া চুলের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।

২৯। মাথার ত্বকের জ্বালাপোড়া প্রতিরোধ করেঃ প্রতিদিনের ধুলা, ময়লা এবং দূষণের ফলে মাথার ত্বকে ময়লা জমে। এসব কারণে অনেক সময় মাথার ত্বকে ছত্রাক আক্রমণ করে। এতে করে অনেকের মাথার ত্বকে প্রদাহ হয়। নিয়মিত কাঠবাদামের তেল ব্যবহার করলে ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ এবং প্রদাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৩০। আমাদের চুলে অনেক সময় খুশকির সমস্যা দেখা দেয়, বিশেষ করে শীতকালে এই সমস্যা দেখা দেয়। শীতকালে এই খুশকি থেকে মুক্তি পেতে কাঠবাদামের তেল নিয়মিতভাবে ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে খুশকির সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

৩১। কাঠবাদাম ত্বক পরিষ্কার করতে ভীষণ কার্যকর। এর জন্য কয়েকটি কাঠবাদাম ভিজিয়ে রেখে ভালোভাবে পেস্ট করে নিন, এর সাথে ১ চামচ পরিমাণ টক দই ও ১ চামচ মধু মিশিয়ে ভালোভাবে মুখে ম্যাসাজ করুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন, তাহলে ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার হয়ে যাবে।

৩২। তারুণ্য ধরে রাখতে নিয়মিতভাবে কাঠবাদামের তেল ব্যবহার করুন, কারণ এটি অ্যান্টি-এজিং হিসেবে পরিচিত। নিয়মিতভাবে রাতে ঘুমানোর পূর্বে কয়েক ফোটা তেল মুখে ম্যাসাজ করে ঘুমিয়ে পড়লে তারুণ্য বজায় থাকবে দীর্ঘদিন পর্যন্ত।

৩৩। কাঠবাদাম স্ক্রাবার হিসেবেও ব্যবহার করা যায়, কাঠবাদামের সাথে মধু ও টক দই মিশিয়ে মুখে ম্যাসাজ করার ফলে ত্বকের মৃত কোষ গুলো দূর হয়। সেই সাথে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাই।

৩৪। যাদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত তারা কাঠবাদামের তেল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

৩৫। কাঠবাদামের তেল নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করতে সাহায্য করে। এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করা যায়।

৩৬। অনেকেরই ত্বকে ব্রণের সমস্যা হয়ে থাকে এই ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিতভাবে কাঠবাদামের তেল ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহারের ফলে ত্বকের ব্রণ দূর করা সম্ভব।

৩৭। কাঠবাদাম কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।

৩৮। যে সমস্ত ব্যক্তিদের গরুর দুধ বা দুধ জাতীয় খাবারে অসুবিধা রয়েছে, তারা গরুর দুধের পরিবর্তে কাঠবাদামের দুধ খেতে পারেন এটি শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

৩৯। গৃহিণীরা সাধারণত রান্নায় স্বাদ বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন ধরনের মসলা ব্যবহার করে থাকেন। তবে মাংস রান্নায় বাদাম বাটা দিলে খাবারের স্বাদ দ্বিগুণ বেড়ে যায়, সেইসাথে হৃদরোগীদের জন্য অনেক উপকারী হয়ে থাকে।

৪০। কাঠবাদাম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ এতে রয়েছে খুব কম পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট যা খুব সহজেই রক্তের সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় না। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা ক্যালোরির চাহিদা মেটাতে পারে।

৪১। কোষের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে কাঠবাদাম, কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ডি যা শরীরের প্রতিটি কোনায় জড়িয়ে থাকা কোষের কর্মক্ষমতা কে বৃদ্ধি করে থাকে, এর ফলে শরীরে ক্ষত সৃষ্টিতে বাধা প্রদান করে।

৪২। নিয়মিত ভাবে পাঁচ থেকে ছয়টি কাঠবাদাম ভিজে খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটে।

৪৩। নিয়মিতভাবে কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কাঠবাদামে রয়েছে ভিটামিন-ই ও শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা দেহকে বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে রক্ষা করে।

৪৪। গর্ভবতী মায়েদের জন্য কাঠবাদাম অনেক উপকারী। গর্ভকালীন সময়ে নিয়মিতভাবে কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে গর্ভস্থ সন্তানের জন্মগত ত্রুটি হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।

৪৫। কাঠবাদাম ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। কাঠবাদামের তেলে রয়েছে ভিটামিন-ই যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং সেই সাথে সূর্যের ক্ষতিকর বেগুনের রশ্মি থেকে রক্ষা করে।

৪৬। কাঠ বাদামের তেল মেকআপ অপসারণ করতে সহায়ক ভূমিকা হিসেবে কাজ করে। একটি টিস্যু অথবা তুলাতে বাদামের তেল ব্যবহার করে ত্বক পরিষ্কার করলে, খুব সহজেই ত্বক পরিষ্কার করা যায়।

৪৭। কাঠবাদামের তেল চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে। তবে কাঠবাদামের তেল ব্যবহারের সময় অবশ্যই লক্ষ্য করতে হবে এটি যেন কোনভাবেই চোখের মধ্যে প্রবেশ করতে না পারে।

৪৮। কাঠবাদামের তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-সি যা চুল ঝলমলে করতে সাহায্য করে। এর ফলে চুল অনেক বেশি নরম ও সুন্দর হয়।

৪৯। বাদামের তেল চুলের রুক্ষ ভাব ও চুল পড়া দূর করতে সাহায্য করে। এই তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ডি ও ম্যাগনেসিয়াম যা চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে। নিয়মিতভাবে কিছুদিন ব্যবহার করার ফলে খুব ভালো ফলাফল পাবেন।

৫০। চুল মজবুত ও আকর্ষণীয় করতে সাহায্য করতে কাঠবাদামের তেল। কারন এতে রয়েছে ভিটামিন-এ, ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-বি১, ভিটামিন-বি২, এবং ভিটামিন-বি৬ চা চুলকে মজবুত এবং আকর্ষণীয় করে।

৫১। আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা কোঁকড়া চুল পছন্দ করেন না। কাঠবাদামের তেল কোঁকড়া চুল সোজা করতে পারে কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন-ই যা চুলকে অনেক বেশি মসৃণ করে এবং চুলের সমস্যার সমাধান করে।

৫২। মাথার ত্বকে প্রতিদিনের ধুলাবলি জমার কারণে জ্বালাপোড়া সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্ত প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে কাঠবাদামের তেল।

৫৩। অনেকের মাথায় চুলের পরিমাণ কম থাকে এবং তারা চান যেন তাদের মাথায় নতুন চুল গজায়। আর তাই মাথার চুল ঘন করতে নিয়মিতভাবে কাঠবাদামের তেল ব্যবহার করতে পারেন।

৫৪। কাঠবাদাম শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। নিয়মিতভাবে খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি কাঠবাদাম খাওয়ার অভ্যাস থাকলে, কাঠবাদামে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে।

৫৫। কাঠবাদাম মনোপজকালীন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। নারীদের ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যেই মাসিক বন্ধ হয়ে যায় এটিকে মেডিকেলের ভাষায় মনোপজ বলা হয়। এ সময় কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে মনোপজকালীন সমস্যা কিছুটা কম হয়ে থাকে।

৫৬। কাঠবাদামের তেল জ্বর কমাতে সাহায্য করে, এই তেল দিয়ে শরীর মালিশ করার ফলে শরীরে তাপমাত্রা কমতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা 

৫৭। পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে কাঠবাদাম। কাঠবাদামে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো যেমন- উপকারী ফ্যাট, মিনারেল, ভিটামিন-ই যা পুরুষের শুক্রানুর পরিমাণ এবং গুণগত মান বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সেই সাথে পুরুষের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

৫৮। জ্বর কমাতে সাহায্য করেঃ জ্বর কমাতে কিছু বিশেষ প্রকৃতির তেল যেমন: Cinnamon, Ginger, Tea tree, Eucalyptus, Lavender ইত্যাদি তেল শরীরে মালিশ করলে তা শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এই সমস্ত তেলের সাথে মিশ্রণ তৈরির জন্য সহায়ক হিসেবে কাঠবাদামের তেল ব্যবহার করতে হয়। তবে জ্বর খুব বেশি হলে কোন ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে সেই ব্যাপারে নির্দেশনা হলো:

  • শিশুর বয়স ৩ মাসের কম হলে সেক্ষেত্রে জ্বর ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি
  • ২ বছর বয়সের শিশুদের জন্য জ্বর ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি
  • বয়স্কদের জন্য ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি জ্বর
  • একটানা ৩ দিনের বেশি সময় ধরে জ্বর এবং তা ক্রমাগত বাড়তে থাকা
  • জ্বরের সাথে শরীর ব্যথা, গলা ব্যথা, কাশি বা অন্য কোনো উপসর্গ

৫৯। শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করেঃ তিনবেলা খাবার গ্রহণ করার ফাঁকে সকালে ও সন্ধ্যায় আমরা চা নাস্তা খেয়ে থাকি। এই সময়ের নাস্তায় কাঠবাদাম রাখা হলে তা যেমন অন্যান্য ক্ষতিকর ফাস্টফুড খাওয়া প্রতিরোধ করে তেমনি ভাবে কাঠবাদামে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান গুলো শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে।

৬০। রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ কাঠবাদামে থাকা এন্টি-অক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যাল সমূহ সর্বোপরি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বিভিন্ন রোগ ও জীবাণুর সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

সর্বশেষ কথা-কাঠ বাদামের উপকারিতা

এতক্ষণ যে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ছিলেন সেই পোস্টটি ছিল ৬০টি অসাধারণ কাঠ বাদামের উপকারিতা সম্পর্কে। আর এই ৬০টি উপকারিতা আমরা আমাদের ডাক্তারদের কাছে পরীক্ষিত করে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। কাঠ বাদামের যে কত গুণ আপনি এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। এমনকি আপনি ডিসিশন নিয়েছেন যে রেগুলার আপনি কাঠবাদাম সেবন করবেন।

এতক্ষণ পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনার কাছে যদি মনে হয়ে থাকে আমরা আমাদের এই পোষ্টের মধ্যে আপনার প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্যগুলো উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি তাহলে অবশ্যই আমাদের পোস্টের নিচে একটি মন্তব্য করে যাবেন। কারন আপনার একটি মন্তব্য আমাদের পোস্ট লেখা আগ্রহ কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে দেয়। এমনকি আপনি চাইলে আমাদের এই পোস্টটি আপনার ফেসবুক আইডি অথবা মেসেঞ্জার এর বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করতে পারেন কারণ তারাও এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে কাঠ বাদামের ৬০ টি অসাধারণ উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবে। এমনকি আপনি চাইলে আমাদের এই ধরনের পোস্টগুলো রেগুলার পড়তে পারেন বা জানতে পারেন তার জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url