ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায়
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের মাঝে অনেকে আছে, যাদের ত্বকে ব্রণ রয়েছে তাদের সত্যিই বিষয়টি অনেক অশান্তি বয়ে আনে। তাই আজকে এই ব্রণ দূর করার সকল নিয়ম নিয়ে পোস্টটি সুন্দরভাবে লেখা হয়েছে। আশা করি আপনি পোস্টটি পড়ে ব্রণ সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পারবেন।
জানতে পারবেন ব্রণ সম্পর্কে আপনার সকল অজানা তথ্যগুলো। তাই ব্রণ থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য আজকে এই পোস্টটি লেখা হয়েছে। আর আপনার মুখে বা ত্বকে যদি ব্রণ থেকে থাকে তাহলে আজকের পোস্টটি শুধু আপনার জন্যই। চলুন আর দেরি না করে শুরু করি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায়
- ব্রণ কি
- ব্রণ হওয়ার কারণ
- ব্রণের প্রকারভেদ
- ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায়
- ব্রণ বেশি না হওয়া বা ছড়িয়ে না যাওয়ার টিপস
- মুখের ব্রণ দূর করার ওষুধ
- শেষ কথাঃ ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায়
ব্রণ কি
ব্রণ হচ্ছে মানব দেহের ত্বকের একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ। যা যা বিশেষত প্যাপ্যুল, পিম্পল, লালচে ত্বক, ক্ষতস্থান, তৈলাক্ত ত্বক ইত্যাদি দেখে বোঝা যায়। ব্রণ মূলত বয়সন্ধিকালে হয়ে থাকে। যা টেস্টোস্টেরন এর মত এন্ড্রোজেন বৃদ্ধি হওয়ার ফলে ব্রণ হয়ে থাকে। বেশি হয়ে থাকে তৈলাক্ত ত্বকে। ব্রণ বেশি হতে দেখা যায় মুখে,বুকের উপরে এবং কি পিঠেও হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ৭ দিনে ব্রণ দূর করার নিয়ম
এটা পুরোটাই নির্ভর করে আপনার শরীরের কোন জায়গায় বেশি তৈলাক্ত রয়েছে। তাই অবশ্যই। সব সময় শরীর পরিষ্কার রাখতে হবে। ব্রণ প্রথমে ফুসড়ির মতো হয়। পরে বড় আকার ধারণ করে। আমাদের চেষ্টা করতে হবে ব্রণ হলে বা না হলেও নিজেকে পরিষ্কার রাখা, তৈলাক্ত শরীর পরিহার করা। শরীর পরিষ্কার রাখার জন্য উন্নত মানের সমান ব্যবহার কর। চলুন দেখে নেই ব্রণ হওয়ার কারণ গুলো কি কি।
ব্রণ হওয়ার কারণ
ব্রণ হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে ত্বক অপরিষ্কার রাখা, পবিত্র অবস্থায় না থাকা, শরীরে তৈলাক্ত করে রাখা ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। তবে এর কিছু প্রধান কারণ রয়েছে যা নিচে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হলো।
1. মানসিকঃ
মানসিকভাবে যারা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করে এর ফলে তাদের ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ড্রোন হওয়ার জন্য মানসিকদুশ্চিন্তা কে এজেন্ট বলে উল্লেখ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ।
2. জেনেটিকঃ
ব্রণ হওয়ার আরেকটি কারণ হলো জেনেটিক কারণ। কিছু জেনেটিক উপাদান যেমন- TNF -আলফা,IL-1, ইত্যাদি ব্রণ হওয়ার জন্য দায়ী হয়ে থাকে। এটি জমজ গবেষণা দ্বারা সমর্থিত। যা মেন্ডেলের বংশগতির পোষকের প্যাটার্ন কে অনুসরণ করে থাকে।
3. হরমোন ঃ
লিঙ্গ ভেদে বয়সন্ধিকালে হরমোনের মাত্রাধিকের কারণে ব্রণ হয়ে থাকে। বয়সন্ধিকালে এন্ড্রোজেন বৃদ্ধির কারণে শরীরে সিবাম তৈরি হয়ে থাকে। আবার কিছু হরমোন রয়েছে যা পুরোপুরিভাবে ব্রণের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এগুলোর মধ্যে টেস্টোস্টেরন, ডিহাইড্রো এপি এন্ডো স্টেরন অন্যতম। এ বিষয়গুলোর জন্যই হরমোনের কারণে ব্রণ হয়ে থাকে।
4. সংক্রমণঃ
ত্বকে ব্রণ হওয়ার পেছনে সংক্রমণ কিছুটা দায়ী। সংক্রমণের ফলে ত্বকে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপরের কারণগুলোর ফলে ত্বকে ব্রণ হতে দেখা যায়। আমাদের চেষ্টা করতে হবে উপরের কারণগুলো থেকে যেন ব্রণ ত্বকে না হয় তার দিকে। তাই সবসময়ই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। শরীর তৈলাক্ত রাখা যাবে না। এমন ভাবে থাকতে হবে যেন কোন ভাবে শরীর তৈলাক্ত না হয়। চলুন ব্রণের প্রকারভেদ জেনে নেয়া যাক।
ব্রণের প্রকারভেদ
- পাসটিউলস ব্রণঃ এই ধরনের ব্রণের চারপাশে লাল ও মাঝখানে সাদা বা হলুদ রঙের হয়ে থাকে। এই ব্রণ হলে ব্যথা হতে পারে।
- হোয়াটহেডস ব্রণঃ ত্বকের লোমকূপ বন্ধ থাকার ফলে শিবাম নিঃসরণে বাধা প্রাপ্ত হয়। যার কারণে ত্বকে থাকা মরা কোষ ও ব্যাকটেরিয়া একসাথে হয়ে তোকে এক ধরনের সাদা ফুসকুড়ি তৈরি করে। এটি হচ্ছে হোয়াইট হেডস ব্রণ। এটি অন্য ব্রণের মত দীর্ঘস্থায়ী হয় না এদের জীবন চক্র ছোট হয়ে থাকে।
- ট্রপিক্যাল একনি ব্রণঃ এ ধরনের ব্রণ অতিরিক্ত গরম ও বাতাসের আদ্রতা বেড়ে গেলে পিঠে উরুতে হয়ে থাকে।
- প্যাপুলস ব্রণঃ এই ব্রণে ব্যথা হয় না। এর বাইরেও ফুলে থাকে না। এই ব্রণ হলে তাকে চাপাচাপি না করাই ভালো হয়। যদি চাপাচাপি করা যায় তাহলে ব্রণ আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়
- ব্ল্যাকহেডস ব্রণঃ ব্ল্যাক হেডস ব্রণ দৃশ্যমান হয়ে থাকে। ব্রণগুলো কালো রং ও ত্বকে সহজেই দৃশ্যমান হয়। লোমকূপ যখন আংশিকভাবে বন্ধ থাকে ঠিক তখনই কিছুটা নিঃসৃত তৈল, মরাকোষ, ব্যাকটেরিয়া এ ধরনের ব্ল্যাক হেডস তৈরি করে। এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে।
ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায়
ব্রণ কেবল নারী নয়, পুরুষদের ক্ষেত্রেও একটি প্রচলিত সমস্যা। ত্বকের জন্য একটি বড় সমস্যা হচ্ছে ব্রন। সারাদিন বাইরে ধুলোবলির ভেতরে থাকার কারণে বেশিরভাগ ছেলেরই ব্রনের সমস্যা দেখা যায়। ব্রন সাধারণত মুখেই বেশি হয়। আর এই ব্রনের কারণে চেহারার স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট হয়। তরুণদের মধ্যে ব্রণের সমস্যা বেশি দেখা যায়। চলুন ব্রণ দূর করার উপায় গুলো দেখানো যাক।
১. বরফ ঃ
বরফের ঠান্ডাভাব ব্রণ কমাতে সাহায্য করবে।
- প্রথমে ত্বককে ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
- একটি বরফের টুকরোকে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে কয়েক মিনিট ব্রণের ওপর রাখুন। বরফ সরাসরি ত্বকে লাগাবেন না।
- পাঁচ মিনিট বিরতি দিয়ে আবার ব্যবহার করুন।
২. ডিমের সাদা অংশ ঃ
যদি মুখে অনেকগুলো ব্রণ হয় তাহলে আপনি সেটার প্রাকৃতিক চিকিৎসার জন্য ডিম ব্যবহার করতে পারেন। মুখের ব্রণ কমাতে ডিমের সাদা অংশ খুবই কার্যকরী। একটি ডিম ভেঙ্গে তার সাদা অংশ আলাদা ভাবে নিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন কিছু সময়ের জন্য। সেটা শুকিয়ে গেলে হালকা ফেসওয়াশ দিয়ে দুই ফেলুন। এভাবে কিছুদিন করলে ব্রণ অনেকটাই কমে যাবে।
পেঁপে ব্রণ দূর করার উপাদান হিসেবে চমৎকার। এটি ত্বক থেকে বাড়তি তেল দূর করে এবং মুখের মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে।
- পাঁচটি ছোট পেঁপের টুকরো ব্ল্যান্ড করুন।
- পেঁপের এই পেস্ট ব্রণের মধ্যে লাগান।
- ৩০ মিনিট এভাবে রাখার পর ধুয়ে ফেলুন।
- ব্রণ না কমা পর্যন্ত প্রতিদিন এটি ব্যবহার করুন
- বাইরে থেকে ঘরে ফিরে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিন।
- মুখে সাবান ব্যবহার না করে ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন
- মুখে ব্রণ দেখা দিলে তা নখ দিয়ে খোঁটাখুঁটি করা একদম ঠিক না। এতে ত্বকে ব্রণের দাগ স্থায়ী হয়ে যাবে
- সাধারণত তৈলাক্ত ত্বকেই ব্রণের সংক্রমণ বেশি হয়। তাই সবসময় মুখ পরিষ্কার রাখুন।
- দিনে কমপক্ষে দু বার গোসল করুন।
- প্রতিদিন অন্তত তিন-চার বার মুখ ধোয়ার অভ্যাস করুন। ব্রণের উৎপাত অনেকটা কমে যাবে।
ব্রণ বেশি না হওয়া বা ছড়িয়ে না যাওয়ার টিপস
আপনার মুখে যদি ব্রণ হয়ে থাকে আর এটি যদি ছড়িয়ে না যায় সেটি চান এক্ষেত্রে নিচে কয়েকটি টিপস আলোচনা করা হলো। আপনি এই সকল টিপস যদি অবলম্বন করেন তাহলে আপনার কাঙ্খিত ফলটি পেয়ে যাবেন। চলুন দেরি না করে শুরু করি।
- টিপস - ১ঃ ব্রণ টিপে বা খুজলে কমে না বরং আরো ব্রণ বৃদ্ধি হয় তাই এমনটা করা উচিত না।
- টিপস - ২ঃ যথা সম্ভব ব্রণ আক্রান্ত হয়েছে সেই স্থানে হাত না দেওয়া।
- টিপস - ৩ঃ ব্রণ না হওয়া ও দূর করার জন্য অবশ্যই ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। তৈলাক্ত রাখা যাবে না।
- টিপস - ৪ঃ আপনি যদি বন্ধুর করার জন্য বাজার থেকে ওষুধ বা ক্রিম নিয়ে আসেন তাহলে অবশ্যই সে ওষুধ একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে দেখিয়ে তারপর ব্যবহার করুন।
- টিপস - ৫ঃ ব্রণ দূর করার জন্য অবশ্যই ওষুধ খেলে নিয়মিত খেতে হবে। নিয়মিত ওষুধ না খেলে ব্রন দূর হতে দেরি হবে।
আশা করি উপরোক্ত পাঁচটি টিপস আপনি বুঝতে পেরেছেন। আপনি যদি উপরের টিপস গুলো অনুসরণ করেন তাহলে অবশ্যই আপনার ত্বকে ব্রণ বাড়বে না বরঞ্চ কমে যাবে। তার চেষ্টা করবেন অবশ্যই নিজেকে পরিষ্কার রাখা ও তৈলাক্ত মুক্ত শরীর রাখা। আশা করি উপরে তথ্যগুলো আপনাকে অনেকটা সাহায্য করবে। চলুন এবার জেনে নেই মুখের ব্রণ দূর করার ওষুধ সম্পর্কে।
মুখের ব্রণ দূর করার ওষুধ
আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যাদের মুখে ব্রণ রয়েছে। তারা এ ধরনের জন্য হয়তো বাইরে ঘুরতেও পারে না। তাদের অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয়। তাই আজকে এই অংশটুকুতে মুখের ব্রণ দূর করার ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব যেন সেই সকল লোক গুলোর উপকার হয়। চেষ্টা করব তাদের ত্বকে ব্রণ যেন না হয় তার ওষুধ গুলো সম্পর্কে। চলুন তাহলে শুরু করি।
আরো পড়ুনঃ লেবু দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়
হঠাৎ একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি দেখেন আপনার মুখে ব্রণ বের হয়েছে তাহলে বিষয়টা অনেক মন খারাপের হয়ে যাবে তাই না। আর সেই সময় আমাদের মাথায় একটি বিষয় ঘুরপাক খাবে কি খেলে এই ব্রণ দূর করা যেতে পারে। আর এই ব্রণ দূর করার ওষুধ গুলোর মধ্যে ট্রেটিভা 10MG একটি ওষুধ যা ব্রণ দূর করতে অনেক সাহায্য করে থাকে। এই ওষুধ খাওয়ার ফলে মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর হয় ও তৈলাক্ত উপাদান তৈরিতে বাধা দেয়। তার সাথে সাথে ত্বককে নরম রাখতে সাহায্য করে। তাই আপনার মুখে যদি ব্রণ দেখা দেয় তাহলে এই ওষুধটি আপনি খেতে পারেন।
শেষ কথাঃ ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায়
আপনি যদি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে থাকেন তাহলে ব্রণ সম্পর্কে যত তথ্য আপনারা যারা ছিল তা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন। ব্রণ সম্পর্কিত যত তথ্য রয়েছে তা আমরা ইতিমধ্যে এই পোস্টে তুলে ধরেছি। যদি কোন তথ্য আপনি না পেয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে পোস্টের নিচে কমেন্টে জানিয়ে দিতে পারেন আমরা আপনার অজানা তথ্যকে জানানোর জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকবো।
আপনি যদি পোস্টটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে পোস্টটি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। চাইলে একটি কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন আপনার কাছে পোস্টটি কেমন হয়েছে সে সম্পর্কে। ধন্যবাদ পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য, আসসালামু আলাইকুম।
ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url