লেবু দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়
পোস্ট সূচিপত্র ঃ লেবু দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়
- ব্রণ কি
- ব্রণ হওয়ার কারণ
- ব্রণের প্রকারভেদ
- লেবু দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়
- ব্রণ বেশি না হওয়া বা ছড়িয়ে না যাওয়ার টিপস
- মুখের ব্রণ দূর করার ওষুধ
- শেষ কথা ঃ লেবু দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়
ব্রণ কি
ব্রণ হচ্ছে মানব দেহের ত্বকের একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ। যা যা বিশেষত প্যাপ্যুল, পিম্পল, লালচে ত্বক, ক্ষতস্থান, তৈলাক্ত ত্বক ইত্যাদি দেখে বোঝা যায়। ব্রণ মূলত বয়সন্ধিকালে হয়ে থাকে। যা টেস্টোস্টেরন এর মত এন্ড্রোজেন বৃদ্ধি হওয়ার ফলে ব্রণ হয়ে থাকে। বেশি হয়ে থাকে তৈলাক্ত ত্বকে। ব্রণ বেশি হতে দেখা যায় মুখে,বুকের উপরে এবং কি পিঠেও হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায়
এটা পুরোটাই নির্ভর করে আপনার শরীরের কোন জায়গায় বেশি তৈলাক্ত রয়েছে। তাই অবশ্যই। সব সময় শরীর পরিষ্কার রাখতে হবে। ব্রণ প্রথমে ফুসড়ির মতো হয়। পরে বড় আকার ধারণ করে। আমাদের চেষ্টা করতে হবে ব্রণ হলে বা না হলেও নিজেকে পরিষ্কার রাখা, তৈলাক্ত শরীর পরিহার করা। শরীর পরিষ্কার রাখার জন্য উন্নত মানের সমান ব্যবহার কর। চলুন দেখে নেই ব্রণ হওয়ার কারণ গুলো কি কি।
ব্রণ হওয়ার কারণ
ব্রণ হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে ত্বক অপরিষ্কার রাখা, পবিত্র অবস্থায় না থাকা, শরীরে তৈলাক্ত করে রাখা ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। তবে এর কিছু প্রধান কারণ রয়েছে যা নিচে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হলো।
1. মানসিকঃ
মানসিকভাবে যারা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করে এর ফলে তাদের ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা
বেড়ে যায়। ড্রোন হওয়ার জন্য মানসিকদুশ্চিন্তা কে এজেন্ট বলে উল্লেখ করেছে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ।
2. জেনেটিকঃ
ব্রণ হওয়ার আরেকটি কারণ হলো জেনেটিক কারণ। কিছু জেনেটিক উপাদান যেমন- TNF
-আলফা,IL-1, ইত্যাদি ব্রণ হওয়ার জন্য দায়ী হয়ে থাকে। এটি জমজ গবেষণা দ্বারা
সমর্থিত। যা মেন্ডেলের বংশগতির পোষকের প্যাটার্ন কে অনুসরণ করে থাকে।
3. হরমোন ঃ
লিঙ্গ ভেদে বয়সন্ধিকালে হরমোনের মাত্রাধিকের কারণে ব্রণ হয়ে থাকে। বয়সন্ধিকালে এন্ড্রোজেন বৃদ্ধির কারণে শরীরে সিবাম তৈরি হয়ে থাকে। আবার কিছু হরমোন রয়েছে যা পুরোপুরিভাবে ব্রণের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এগুলোর মধ্যে টেস্টোস্টেরন, ডিহাইড্রো এপি এন্ডো স্টেরন অন্যতম। এ বিষয়গুলোর জন্যই হরমোনের কারণে ব্রণ হয়ে থাকে।
4. সংক্রমণঃ
ত্বকে ব্রণ হওয়ার পেছনে সংক্রমণ কিছুটা দায়ী। সংক্রমণের ফলে ত্বকে ব্রণ
হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপরের কারণগুলোর ফলে ত্বকে ব্রণ হতে দেখা যায়। আমাদের চেষ্টা করতে হবে উপরের কারণগুলো থেকে যেন ব্রণ ত্বকে না হয় তার দিকে। তাই সবসময়ই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। শরীর তৈলাক্ত রাখা যাবে না। এমন ভাবে থাকতে হবে যেন কোন ভাবে শরীর তৈলাক্ত না হয়। চলুন ব্রণের প্রকারভেদ জেনে নেয়া যাক।
ব্রণের প্রকারভেদ
- পাসটিউলস ব্রণঃ এই ধরনের ব্রণের চারপাশে লাল ও মাঝখানে সাদা বা হলুদ রঙের হয়ে থাকে। এই ব্রণ হলে ব্যথা হতে পারে।
- হোয়াটহেডস ব্রণঃ ত্বকের লোমকূপ বন্ধ থাকার ফলে শিবাম নিঃসরণে বাধা প্রাপ্ত হয়। যার কারণে ত্বকে থাকা মরা কোষ ও ব্যাকটেরিয়া একসাথে হয়ে তোকে এক ধরনের সাদা ফুসকুড়ি তৈরি করে। এটি হচ্ছে হোয়াইট হেডস ব্রণ। এটি অন্য ব্রণের মত দীর্ঘস্থায়ী হয় না এদের জীবন চক্র ছোট হয়ে থাকে।
- ট্রপিক্যাল একনি ব্রণঃ এ ধরনের ব্রণ অতিরিক্ত গরম ও বাতাসের আদ্রতা বেড়ে গেলে পিঠে উরুতে হয়ে থাকে।
- প্যাপুলস ব্রণঃ এই ব্রণে ব্যথা হয় না। এর বাইরেও ফুলে থাকে না। এই ব্রণ হলে তাকে চাপাচাপি না করাই ভালো হয়। যদি চাপাচাপি করা যায় তাহলে ব্রণ আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়
- ব্ল্যাকহেডস ব্রণঃ ব্ল্যাক হেডস ব্রণ দৃশ্যমান হয়ে থাকে। ব্রণগুলো কালো রং ও ত্বকে সহজেই দৃশ্যমান হয়। লোমকূপ যখন আংশিকভাবে বন্ধ থাকে ঠিক তখনই কিছুটা নিঃসৃত তৈল, মরাকোষ, ব্যাকটেরিয়া এ ধরনের ব্ল্যাক হেডস তৈরি করে। এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে।
উপরোক্ত ব্রণের প্রকারভেদ গুলো ছাড়াও আরো বেশ কিছু উপকারিত রয়েছে আপনাদের যদি জানার ইচ্ছা থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে পারে। আমরা ব্রণের প্রকারভেদ নিয়ে আরো একটি পোস্ট করে আপনাকে জানিয়ে দেবো। চলুন এবার জেনে নেই ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে।
লেবু দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়
আমাদের সবারই কম-বেশি ব্রণ হয়। ধুলাবালি, ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার না করা ও খাওয়া-দাওয়ার অনিয়মসহ বিভিন্ন কারণে ত্বকে ব্রণ হতে পারে। মুখের সৌন্দর্য অনেকটা নষ্ট করে দেয়।সাধারণত কিশোর বয়সেই ব্রণ বেশি হয়। ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন লেবুর রস দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ফেসপ্যাক। তবে এর সঙ্গে কোনো প্রাকৃতিক উপাদান মেশালে ব্রণ দূর হওয়ার পাশাপাশি ব্রণের দাগ ও কালচে ভাবও দূর হয়। চলুন সেগুলো দেখে নেয়া যাক।
লেবুর রস ও মধুঃ
লেবুর রসের সঙ্গে সামান্য মধু মিশিয়ে মুখে লাগান। পনেরো মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক মুখের ব্রণ দূর করার পাশাপাশি ব্রণের দাগও দূর করে দেয়। এ ছাড়া এটি ত্বকের কালচে দাগও দূর করে।
তাজা লেবুর রসঃ
তাজা লেবুর রস ছেঁকে নিন এবং একটি তুলোর প্যাড বা আপনার আঙ্গুলের ডগা ব্যবহার করে সরাসরি আপনার ব্রণ-আক্রান্ত এলাকায় ব্যবহার করুন। এটি প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য বসতে দিন এবং তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। লেবুর রসের অম্লতা অতিরিক্ত তেল এবং মৃত ত্বকের কোষ ভেঙ্গে ফেলতে সাহায্য করতে পারে
লেবুর রস ও শসার রসঃ
সমপরিমাণ লেবুর রস ও তার সাথে শসার রস একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। নিয়মিত এই প্যাকটি ব্যবহার করলে আস্তে আস্তে ব্রণ দূর হবে।
দুধ ও লেবুর রসঃ
সমান পরিমাণে দুধ ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। বিশেষ করে যেসব জায়গায় ব্রণ আছে সেই জায়গায় বেশি করে লাগাতে হবে। ১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক ব্রণ দূর করার পাশাপাশি ত্বকের কালচে ভাব দূর করে এবং ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে।
লেবু এবং চিনির স্ক্রাবঃ
চিনির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে একটি প্রাকৃতিক স্ক্রাব তৈরি করবেন। এরপর ব্রণ আছে এমন জায়গাগুলিতে ফোকাস করে বৃত্তাকার গতিতে আপনার মুখে মিশ্রণটি আলতো করে ম্যাসাজ করুন। চিনি এক্সফোলিয়েট করতে সাহায্য করে, যখন লেবুর অম্লতা অমেধ্য অপসারণ করতে সহায়তা করে।
লেবুর রস ও কমলার রসঃ
সমান পরিমাণ লেবুর রস ও কমলার রস একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগাবেন। ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক মুখের ব্রণ দূর করার পাশাপাশি ত্বক উজ্জ্বল করে।
ব্রণ বেশি না হওয়া বা ছড়িয়ে না যাওয়ার টিপস
আপনার মুখে যদি ব্রণ হয়ে থাকে আর এটি যদি ছড়িয়ে না যায় সেটি চান এক্ষেত্রে
নিচে কয়েকটি টিপস আলোচনা করা হলো। আপনি এই সকল টিপস যদি অবলম্বন করেন তাহলে
আপনার কাঙ্খিত ফলটি পেয়ে যাবেন। চলুন দেরি না করে শুরু করি।
- টিপস - ১ঃ ব্রণ টিপে বা খুজলে কমে না বরং আরো ব্রণ বৃদ্ধি হয় তাই এমনটা করা উচিত না।
- টিপস - ২ঃ যথা সম্ভব ব্রণ আক্রান্ত হয়েছে সেই স্থানে হাত না দেওয়া।
- টিপস - ৩ঃব্রণ না হওয়া ও দূর করার জন্য অবশ্যই ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। তৈলাক্ত রাখা যাবে না।
- টিপস - ৪ঃ” আপনি যদি বন্ধুর করার জন্য বাজার থেকে ওষুধ বা ক্রিম নিয়ে আসেন তাহলে অবশ্যই সে ওষুধ একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে দেখিয়ে তারপর ব্যবহার করুন।
- টিপস - ৫ঃ ব্রণ দূর করার জন্য অবশ্যই ওষুধ খেলে নিয়মিত খেতে হবে। নিয়মিত ওষুধ না খেলে ব্রন দূর হতে দেরি হবে।
আশা করি উপরোক্ত পাঁচটি টিপস আপনি বুঝতে পেরেছেন। আপনি যদি উপরের টিপস গুলো অনুসরণ করেন তাহলে অবশ্যই আপনার ত্বকে ব্রণ বাড়বে না বরঞ্চ কমে যাবে। তার চেষ্টা করবেন অবশ্যই নিজেকে পরিষ্কার রাখা ও তৈলাক্ত মুক্ত শরীর রাখা। আশা করি উপরে তথ্যগুলো আপনাকে অনেকটা সাহায্য করবে। চলুন এবার জেনে নেই মুখের ব্রণ দূর করার ওষুধ সম্পর্কে।
ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url