১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস
আসসালামু আলাইকুম। আমাদের মাঝে অনেকে আছে যারা ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস
সম্পর্কে অবগত নন। জানেন না ১৬ ডিসেম্বর কিসের জন্য ১৬ ডিসেম্বর হিসেবে পরিচিত
লাভ করেছে। এর ইতিহাস সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব। আপনি যদি ১৬ই
ডিসেম্বরের ইতিহাস সম্পর্কে না জেনে থাকেন আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার
মাধ্যমে এর ইতিহাস জানতে পারবে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস
- ১৬ ডিসেম্বর কি দিবস
- ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩
- ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ কততম বিজয় দিবস
- ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস
- ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ কি বার
- বিজয় দিবস কেন পালিত হয়
- শেষ কথাঃ ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস
১৬ ডিসেম্বর কি দিবস
আমরা বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে ১৬ ডিসেম্বর কি দিবস যদি না জেনে থাকি তাহলে এটি একটি খুবই লজ্জাজগড় বিষয়। ডিসেম্বর কি দিব সেটি আমাদের জানা অত্যন্ত জরুরী। কারণ ১৬ ডিসেম্বর এর সাথে আমাদের অনেক কিছুই জড়িয়ে রয়েছে। তাই বাঙালি হিসেবে আমাদের এই দিবসটির কথা জানা খুবই জরুরী। কেউ যদি জিজ্ঞেস করে ১৬ই ডিসেম্বর কি দিবস আর আমরা যদি তা না পারি তাহলে সত্যি এটি দুঃখজনক বিষয়। তাই পোস্টটির এই অংশটুকু পড়ে ১৬ই ডিসেম্বর সম্পর্কে জানতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ থার্টি ফার্স্ট নাইট কবে হয়
১৯৭১ সালে যে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করার পর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার
বাহিনীরা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাই দিনটিকে স্মরণ রাখতে
ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতুন প্রজন্মকে জানানোর জন্য এবং কি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস
সম্পূর্ণ জানার জন্যই প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর বিভিন্ন কর্মসূচি ও অনুষ্ঠান করার
মাধ্যমে বিজয় দিবস পালিত হয়। তাই ১৬ই ডিসেম্বর কে বিজয় দিবস বলা হয়ে থাকে।
১৯৭১ সালের যুদ্ধে বিজয় অর্জনের জন্য ১৬ই ডিসেম্বর কে বিজয় দিবস বলা হয়ে থাকে।
আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন। চলুন ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১৬ ডিসেম্বর ২০২৩
আমাদের এই বাংলাদেশে প্রতিটি বছর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালন করা হয়ে থাকে। তেমনি প্রতিবছরের মতোই এই বছরেও অর্থাৎ ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৩ সালে বিজয় দিবস পালন করা হবে। এই দিনে বাংলাদেশের প্রতিটি স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে সকল প্রতিষ্ঠানে সকল প্রকার অনুষ্ঠান এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয় দিবস পালন করা হবে।
১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ কততম বিজয় দিবস
বাংলাদেশ দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয় যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন
করে। বাংলাদেশ এর কাছে সেই দিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা আত্মসমর্পণ করেন। এর
পরবর্তীতে ২২ শে জানুয়ারি ১৯৭২ সালে এক ঘোষণাতে ১৬ ডিসেম্বর কে রাষ্ট্রীয়ভাবে
বিজয় দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। তার ওই ধারাবাহিকতায় ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ সালে
৫২ তম বিজয় দিবস পালন করা হবে।
১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস
বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বা বাঙালি হিসেবে ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস আমাদের জানতে হবে। জানতে হবে ১৯৭১ এর সকল ঘটনা সম্পর্কে। তাই আজকে ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরব। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর যখন ভারত ও পাকিস্তান আলাদা হয়ে যায় তখন পাকিস্তান আবার দুইটি অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। একটি হলো পূর্ব পাকিস্তান অপরটি পশ্চিম পাকিস্তান। তখনকার পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ নামে পরিচিত। যে দেশে আজকে আমরা বসবাস করি। সেই সময় পশ্চিম পাকিস্তান শুরু থেকেই পূর্ব পাকিস্তানদের উপর শাসন শোষণ করে আসছিল।
আরো পড়ুনঃ জাতীয় শোক দিবস কবে
তাদের সাথে প্রতিটি ক্ষেত্রে অবিচার করা হতো। এই নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে লাগলো। তারা শুরু থেকে প্রতিবাদ করলেও জোরালো প্রতিবাদ শুরু হয় ১৯৭০ সালে। ১৯৭০ এর নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান সংখ্যাগরিষ্ঠ ভাবে জয়লাভ করলেও পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল না। তখন থেকেই জোরালো প্রতিবাদ শুরু করে পূর্ব পাকিস্তানরা। এই ক্ষমতা হস্তান্তর করার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারপরে ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার পর শুরু হয় স্বাধীনতা সংগ্রাম অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধ। এই স্বাধীনতা সংগ্রাম বা মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু-মুসলিম, ধনী-গরিব, কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক ইত্যাদি থেকে শুরু করে সকলেই স্বাধীনতা সংগ্রাম বা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তানের কাছে আত্মসমর্পণ করেন এবং পূর্ব পাকিস্তান জয়লাভ করে। আর এই ১৬ই ডিসেম্বরকে স্মরণীয় রাখার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে জানার জন্য, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার জন্য, নতুন প্রজন্মের কাছে সকল কথা জানানোর জন্য ১৬ই ডিসেম্বরকে বিজয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এভাবেই ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের মাঝে বিজয় দিবস হিসেবে পরিচিত লাভ করে।
১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ কি বার
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর কি বার ছিল তা আমরা অনেকেই জানিনা। এই প্রশ্ন প্রায়
অনেক জায়গায় দেখা যায় যেমন চাকরি পরীক্ষা, পাবলিক পরীক্ষা, মেডিকেল
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, সাধারণ পাবলিক ভর্তি পরীক্ষায় ইত্যাদি এমন ধরনের
পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞানমূলক প্রশ্ন হিসেবে এই প্রশ্ন দেখা যায়। তাই
বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর কি বার ছিল এটি
জানা জরুরী। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা বাঙ্গালীদের কাছে যেদিন
আত্মসমর্পণ করেছিল সেদিন ছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। সে দিনটি
ছিল বৃহস্পতিবার। আশা করি আপনি এই প্রশ্নের উত্তর আর কোনদিন ভুলবেন না। চলুন
জেনে নেওয়া যাক বিজয় দিবস কেন পালিত হয় এই সম্পর্কে।
বিজয় দিবস কেন পালিত হয়
আমাদের বাংলাদেশের প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট দিনকে কেন্দ্র করে বিজয় দিবস পালিত হয় আর এই দিনটি হচ্ছে ১৬ ডিসেম্বর। প্রতিবছরই ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালন করা হয়। আর আপনার মনে একটি প্রশ্ন জাগতেই পারে বিজয় দিবস কেন পালিত হয়। প্রশ্ন জাগাটা স্বাভাবিক। ১৯৭১ সালে ৯ মাস রক্তক্ষয় যুদ্ধ করার পর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে। বিজয় লাভের এই ইতিহাস পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পৌঁছে দেওয়ার জন্য ১৬ ডিসেম্বর প্রতিবছর বাংলাদেশে বিজয় দিবস পালিত হয়।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের আয়তন কত - বাংলাদেশের জনসংখ্যা কত
এটি পালন করার মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে সকল জায়গায় আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই সকল অনুষ্ঠানে ১৬ ডিসেম্বর সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের ছোট নাটক, নিত্য, সঙ্গীত, চিত্র অংকন প্রতিযোগিতা ইত্যাদি নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আর এসব অনুষ্ঠান ছোট শিশুরা দেখে অনুপ্রাণিত হয়। জানতে পারে মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্কে, ১৬ ডিসেম্বরের সম্পর্কে, কীভাবে বিজয় অর্জন করেছিল সেই সম্পর্কে। কারণগুলোর জন্যই বিজয় দিবস পালিত হয়ে থাকে। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন।
শেষ কথাঃ ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস
প্রিয় পাঠক আজকের পোস্টটি সম্পন্ন করার মাধ্যমে আপনি আপনার অজানা তথ্যগুলো জানতে
পেরেছেন। জানতে পেরেছেন ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস সম্পর্কে। তার পাশাপাশি
বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেছি সেগুলো সম্পর্কে। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে
আপনি উপকৃত হয়েছেন। যদি কোন কিছু জানার থাকে সেই ক্ষেত্রে আমাদের সাথে যোগাযোগ
করে অথবা একটি কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন। আপনাদের কমেন্ট আমাদের কাজের উৎসাহ
আরও বাড়িয়ে দেয়। এরকম বিভিন্ন জানতে আমাদের ওয়েব সাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করুন।
আসসালামু আলাইকুম।
ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url