কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় কলমি শাক
প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম, হেডিং দেখে বুঝতে পেরে গেছেন আজকে কি সম্পর্কে
পোস্টে লিখা হয়েছে।। হ্যাঁ আজকে কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে লেখা
হয়েছে।। আমাদের মাঝে অনেকে আছে যারা কলমি শাকের ধারণা রাখেন না বা জানেন না। তাই
তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি লেখা হলো।
আপনি যদি কলমি শাকের সম্পূর্ণ তথ্য জানতে চান তাহলে আশা করব আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি এখন মনোযোগ সহকারে পড়বেন। চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
- কলমি শাক কি
- কলমি শাকের বৈশিষ্ট্য
- কলমি শাকের উপকারিতা
- আমি শাকের অপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় কলমি শাক
- কলমি শাকের ঔষধি গুন
- কলমি শাকের ক্ষতিকর দিক
- শেষ কথা ঃ কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
কলমি শাক কি
কলমি শাক একটি অর্ধ জলজ উষ্ণমণ্ডলীয় লতা যা শাক নামে পরিচিত। এই শাকের বা লতার আদি নিবাস কোথায় তা এখনো জানা যায়নি। এটি সারা বিশ্বের ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করে। যার ইংরেজি নাম ওটার স্পিনান্স (weter spnach),(river spinach)। আর এশিয়াতে এটিকে ডাকা হয় ( kangkong) ।
আরো পড়ুনঃ পুদিনা পাতা খাওয়ার উপকারিতা
এই শাক মূলত পানিতে বা ভেজা মাটিতে জন্ম নিয়ে থাকে। এর ডাটা গুলো প্রায় দুই থেকে তিন মিটার বা তারও বেশি লম্বা হয়ে থাকে। কলমির শাকের ফুল হয় মূলত ট্রাম্পেট আকৃতির। ফুলটি তিন থেকে পাঁচ সেন্টিমিটার চওড়া হয়। এই ফুলটির রং সাদা ও গোড়ার দিকে বেগুনি হয়। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক কলমি শাকের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।
কলমি শাকের বৈশিষ্ট্য
কলমি শাক একটি অর্ধ জলজ উদ্ভিদ বা পাতা। এটি কি আমরা সাল হিসেবেই চিনে থাকি। কলমি শাক এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, হিমোগ্লোবিন ও আশঁসহ আরো বিভিন্ন রকম উপাদান। এই শাকের প্রতি 100 গ্রামে 19 কিলো ক্যালরি শক্তি রয়েছে। যা প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরুষের দৈনিক শক্তির ০.৭৬ % অভাব পূরণ করতে সক্ষম হয়। আর মহিলাদের ক্ষেত্রে ০.৮৩% অভাব পূরণ করতে সক্ষম হয়।
আর এই কলমি শাকের রয়েছে 3.1 গ্রাম শর্করা রয়েছে, 2.1 গ্রাম খাদ্যআশঁ রয়েছে, রয়েছে 2.6 গ্রাম আমিষ, আরো রয়েছে 0.2 গ্রাম ফ্যাট, ১১৩ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, পটাশিয়াম ৩১২ মিলিগ্রাম, এছাড়াও ক্যালসিয়াম রয়েছে ৭৭ মিলিগ্রাম এবং শেষমেষ জিংক ০.১৮ মিলিগ্রাম। পাশাপাশি আরো রয়েছে ভিটামিন সি ৪৯ মিলিগ্রাম, ক্যালরি 30 কিলো ক্যালরি ইত্যাদি সকল পুষ্টিগুণ। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক কলমি শাকের উপকারিতা সম্পর্কে।
কলমি শাকের উপকারিতা
কলমিশাকের বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে। তারপর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা
গুলোর নিচে আলোচনা করা হলো।
- কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকায় এই শাক খাওয়ার ফলে হাড় মজবুত হয়। যাদের হাড়ের সমস্যা আছে তারা যদি কলমি শাক খায় তাহলে তাদের হাড় শক্ত হয়ে যাবে। তাই আমাদের উচিত ছোট থেকেই কলমি শাক নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করা।
- ভিটামিন সি থাকায় কলমি শাক অন্ড অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- এটি বসন্ত রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে থাকে।
- কারো যদি কষ্ট কাঠিন্য থেকে থাকে আর সে যদি নিয়মিত কলমি শাক খায় সে ক্ষেত্রে তার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
- কোন সন্তান জন্ম দেওয়ার পর যদি তার মায়ের বুকের দুধ না পায় সে ক্ষেত্রে বাচ্চার মাকে কলমি শাক রান্না করে খাওয়ালে তার শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পেতে থাকবে।
- কলমি শাক রক্তশূন্যতা রোগীদের জন্য অনেক উপকারে আসে। এর কারণ হলো কলমি শাকে থাকা লৌহ। এই লৌহের ফলে রক্তশূন্যতা ভালো হয়ে যাবে।
- নিয়মিত কলমি শাক খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি হয়ে যাবে।
- যাদের অকারনেই মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যায় তারা যদি নিয়মিত কলমি শাক খায় তাহলে তার এই সমস্যা দূর হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
- যদি কারো ফোড়া বা বাগি হয় সে ক্ষেত্রে এই কলমি পাতা নিয়ে এসে আদাসহ পাটায় বেটে থোরার আশেপাশে দিয়ে দিলেই খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাওয়া যায়।
কলমি শাকের অপকারিতা
আমাদের জীবনে অতিরিক্ত কিছুই ভালো নয়। আপনি যাই খান না কেন আর যাই করেন না কেন
অতিরিক্ত করতে গেলে তাতে অনেক রকম বাধা আসবে, অনেক রকম সমস্যা দেখা দিবে। তাই
আমাদের উচিত পরিমাণ মতো কাজ করা পরিমান মত খাওয়া দাওয়া করা। আপনি যদি অতিরিক্ত
পরিমাণে কলমি শাক খান সেক্ষেত্রে আপনার ডায়রিয়া হতে পারে। পরিপাক তন্ত্রের
সমস্যা থাকলে ডাক্তার পরামর্শ ছাড়া কলমি শাক না খাওয়াই ভালো।
গর্ভাবস্থায় কলমি শাক
গর্ভাবস্থায় কলমি শাক মা ও শিশু উভয়ের জন্যই বেশ উপকারী একটি শাক। কলমি শাকে
থাকা ফাইবার, প্রোটিন, ফলিক অ্যাসিড ইত্যাদি পুষ্টিকর উপাদান থাকায় কলমি শাক মা
ও শিশুর স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। কলমি শাকে সাথে থাকা প্রচুর পরিমাণে
ফলিক অ্যাসিড বাচ্চার মস্তিষ্ক, নলজ ইত্যাদি উন্নতি করে থাকে। তবে একটি দিকে
অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে তাই এসব খাবার খাওয়ার সময় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন
করতে হবে। আপনি চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরে কলমি শাক খেতে পারেন। চলুন
এবার জেনে নেই কলমি শাকের ঔষধি গুণ সম্পর্কে।
কলমি শাকের ঔষধি গুন
কলমি শাক বিভিন্ন ওষুধের গুনাগুন বজাই রাখে। এটির মাধ্যমে স্বাস্থ্য উন্নতি হতে
থাকে। নিচে কয়েকটি গুণ তুলে ধরা হলো।
- প্রতিরোধশীলতা বৃদ্ধিঃ কলমি শাকে থাকা ভিটামিন সি ও এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের প্রতিরোধশীলতা বৃদ্ধি করে এবং ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
- হৃদয়ের স্বাস্থ্যকরঃ কলমি শাকের সাথে থাকা ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং অন্যান্য মিনারেল হৃদয়ের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।
- পুষ্টিকরঃ এই শাকে থাকা প্রোটিন, ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেট, মিনারেল ইত্যাদি সহ বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান থাকে। যা দেহের পুষ্টি বৃদ্ধি করে।
-
পাচন শক্তির উন্নতিঃ কলমি শাকে প্রোটিনো ফাইবার থাকায় এটি পাচন
শক্তি উন্নতি করে ও পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
কলমি শাকের ক্ষতিকর দিক
কলমি শাকের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন এর ক্ষতিকর দিক রয়েছে। এটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য হলেও এটি আপনার দেহের জন্য ক্ষতিকর রোগ উপাদান হয়ে যেতে পারে। কলমি শাক খাওয়ার ফলে এলার্জির ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ধনে পাতার উপকারিতা
এটি খাওয়ার ফলে এলার্জি উত্তপ্ত হয়ে যায় যা একজন এলার্জির রোগীকে অনেক বিপদে
ফেলতে পারে। তাছাড়া কলমি শাক পেস্টিসাইড ব্যবহার করে উৎপাদন করা হয়ে থাকে। যার
ফলে এটি খাওয়ার পরে বিভিন্ন রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে।
শেষ কথাঃ কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক এতক্ষণে আপনি যে পোস্টটি সম্পর্কে পড়ছিলেন তা হচ্ছে কলমি শাক সম্পর্কে। আশা করি আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে বেশি উপকৃত হয়েছেন। আপনি যদি কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে এতক্ষণে তা জেনে গেছেন। আপনি যদি পোস্টটি পড়ে উপকৃত হন তাহলে এটি আপনার আপনজনদের কাছে শেয়ার করে দিতে পারেন।
আপনি যদি আপনার কাঙ্খিত ফলাফল পেয়ে থাকেন তাহলে পোষ্টের নিচে একটি মন্তব্য করে যাবেন।। আপনার একটি মন্তব্য আমাদের পরের পোস্ট লিখতে অনেক উৎসাহ জাগায়।আশা করি আপনি আপনার কাঙ্খিত ফলাফল পেয়ে গেছেন। এরকম বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানতে আমাদের ওয়েব সাইটটি প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আসসালামুয়ালাইকুম।
ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url