ব্রেন টিউমারের লক্ষণ - ব্রেন টিউমারের ঝুঁকির কারণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। আজকে আপনাদের মাঝে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। আজকের বিষয় হচ্ছে ব্রেন টিউমারের লক্ষণ - ব্রেন টিউমারের ঝুঁকির কারণ। আপনি যদি সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে ব্রেন টিউমারের লক্ষণ, ব্রেন টিউমার কেন হয় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
এতক্ষণ হয়তো বুঝতে পেরেছেন আজকে কি নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। তাই ব্রেন টিমার কেন হয় ও এর লক্ষণ সম্পর্কে জানতে হলে পোস্টটি সম্পন্ন করতে হবে। আশা করি আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়বেন। চলুন তাহলে বিস্তারিত জানা যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃব্রেন টিউমারের লক্ষণ - ব্রেন টিউমারের ঝুঁকির কারণ
ব্রেন টিউমার কেন হয়
শরীরের যে কোন জায়গায় বা অঙ্গের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়াকে টিউমার বলে। আর টিউমারটি যদি মস্তিষ্কের মধ্যে হয় তাহলে তাকে ব্রেন টিউমার বলে। সাধারণত টিউমারটি মাথার খুলির ভেতরকার একাধিক সেলের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি তত্ত্বের জন্য এর জন্ম হয়। সাধারণত জেনেটিক কারণে টিউমার হয়ে থাকে। জেনেটিক কারণ ছাড়াও বিভিন্ন খাদ্যে ভেজাল, খাদ্যের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষতিকর কেমিক্যাল এর প্রভাবে ব্রেন টিউমার হয়ে থাকে। তাছাড়া ব্রেন টিউমার হওয়ার পেছনে আরেকটি কারণ রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় - রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ঔষধ
তা হচ্ছে মস্তিষ্কের মধ্যে যখন স্বাভাবিক কোর্সগুলোর ডিএনএতে কোন সমস্যা থাকে পোস্টগুলো বিভক্ত হয়ে মারা যায়। পোস্ট মারা যাওয়ার স্থানে যখন নতুন পোস্ট জন্ম নেয় তখন পুরনো কোষগুলো নষ্ট হয় না। এটার ফলে পুরনো কোষগুলো জমে বা একত্রিত হয়ে টিউমার সৃষ্টির সম্ভাবনা জায়গায়। আবার বংশগত কারণেও ব্রেন টিউমার হয়ে থাকে এক্ষেত্রে তার বংশে মা-বাবা আত্মীয়র মধ্যে কারো টিউমার হয়ে থাকলে তার পরবর্তী প্রজন্মে বংশের যে কারো হতে পারে। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক ব্রেন টিউমারের লক্ষণ সম্পর্কে।
ব্রেন টিউমারের লক্ষণ
অনেকগুলো ব্রেন টিউমারের লক্ষণ রয়েছে। নিচে ব্রেন টিউমারের লক্ষণ গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে উপকৃত হবেন। চলুন তাহলে জানা যাক।
- তীব্র মাথা ব্যথাঃ ব্রেন টিউমারে সবচেয়ে প্রধান লক্ষণ হচ্ছে মাথা ব্যথা করা। মাথা ব্যথার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাথা রয়েছে। সব ব্যথা ব্রেন টিউমারের ব্যথা হয়ে থাকে না। বেন টিউমারের ব্যথা হচ্ছে এমন রোগীর মাথা তীব্র ভাবে ব্যথা করবে এবং তা সহ্য করার বাইরে চলে যাবে। কারো মধ্যে যদি এমন ব্যথা অনুভব হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
- বমি হওয়াঃ ব্রেন টিউমারের আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে মাথাব্যথা সহ কোন কারণ ছাড়াই বমি শুরু হওয়া। হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়াই আপনার যদি বমি হয় সে ক্ষেত্রে আপনি সাবধানতা অবলম্বন করবেন। এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবে।
- মাথা ঘোরাঃ ব্রেন টিউমারের জন্য হঠাৎ মাথা ঘোরার কারণে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। আপনি যদি আপনার মাঝে মাথা ঘোরার জন্য পড়ে জান সেক্ষেত্রে একটু সাবধানতা অবলম্বন করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হবে। এরকম মাথা ঘোরা ব্রেন টিউমারের লক্ষণ হতে পারে।
- কম শুনতে পাওয়াঃ ব্রেন টিউমারের লক্ষণ এর মধ্যে কম শুনতে পাওয়া একটি লক্ষণ হতে পারে। তাই আপনি যখন হঠাৎ কানে কম শুনতে পান সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
আপনার মাঝে যদি উপর লক্ষণ গুলো খেয়াল করেন, সেক্ষেত্রে না ঘাবরিয়ে যত
তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। ডাক্তার যেভাবে বলবে সেভাবে
কাজ করলে টিউমার ভালো হয়ে যাবে। চলুন তাহলে জানান যাক ব্রেন টিউমারের ঝুঁকির
কারণ সম্পর্কে।
ব্রেন টিউমারের ঝুঁকির কারণ
ব্রেন টিউমারের ঝুঁকির কারণ গুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রথমে আসে ক্যান্সার। ব্রেন টিউমারের মাধ্যমে ক্যান্সার সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু যে ব্রেন টিউমারের মাধ্যমে ক্যান্সার হয় এটি মোটেও ঠিক কথা নয়। স্বাভাবিক মানুষ যাদের ব্রেন টিউমার নেই তাদেরও ক্যান্সার হতে পারে। ব্রেন টিউমার এর কারনে মস্তিষ্ক স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। যা একজন মানুষের কাছে একটি সমস্যার সৃষ্টি করে। ব্রেন টিউমারের ফলে ব্রেনে আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। যা মানুষকে অনেক সমস্যায় ফেলে। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক কাদের উপর ব্রেন টিউমার হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
ব্রেন টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা কাদের বেশি
বয়স্কদের ব্রেন টিউমারের ঝুঁকিঃ বয়স বাড়ার সাথে সাথে ব্রেন
টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যাদের বয়স ৬৫ বা তার বেশি তাদের ক্ষেত্রে
ব্রেন টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। এই বয়সের লোকদের
মধ্যে মেডুলোব্লাস্টমাস বেশি হয় বলে ব্রেন টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা
বেশি।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস এর লক্ষণ - ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
লিঙ্গ ভেদে ব্রেন টিউমারের ঝুঁকিঃ সাধারণত মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের
টিউমার বেশি হতে দেখা যায়। বর্তমানে যত ব্রেন টিউমারের রোগী রয়েছে তাদের
মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা হচ্ছে পুরুষ।
বংশগতভাবে ব্রেন টিউমারঃ বংশগতভাবে ব্রেন টিউমার হয়ে থাকে। মা বাবা, আত্মীয়-স্বজনদের কারো যদি ব্রেন টিউমার আগে থেকে থাকে সেক্ষেত্রে পরবর্তী প্রজন্মের যে কারো ব্রেন টিউমার হতে পারে।
উপরের আলোচনা থেকে এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন কাদের জন্য ব্রেন টিউমার হওয়ার
ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি রয়েছে। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক ব্রেন টিউমার হলে করণীয়
কি।
ব্রেন টিউমার হলে করণীয়
ব্রেন টিউমার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সমস্যা কথা বিস্তারিত বলে চিকিৎসা গ্রহণ করা। ব্রেন টিউমার আছে কিনা বা হয়েছে কিনা তা তা জানতে পারবে এইসব পরীক্ষার মাধ্যমে---সিটি স্ক্যান, এম আর আই, ইসিজি, ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাফি টেস্টের মাধ্যমে নির্ণয় করা যায়। ব্রেন টিউমার এর জন্য সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপির মাধ্যমে তা চিকিৎসা করা হয়।
এবার রোগ নির্ণয় হলে রোগ নিরাময়ের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। আর ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। যা মধ্যবিত্তদের ক্ষেত্রে অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই চেষ্টা করতে হবে অল্প খরচের মাধ্যমে কিভাবে ব্রেন টিউমার চিকিৎসা করা যায়। চলুন এবার তাহলে ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা সম্পর্কে জানা যাক।
ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা
আমাদের শরীরে ব্রেন টিউমারের আকার আকৃতি ও উদাহরণ অনুযায়ী একেক জনের একেক রকম
চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। চলুন ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা সম্পর্কে জানা যায়।
সার্জারি বা অপারেশনঃ ব্রেন টিউমার এর চিকিৎসার জন্য সবচেয়ে
জরুরি হচ্ছে সার্জারি বা অপারেশন। বর্তমানে ডাক্তাররা সার্জারি মাধ্যমে ব্রেন
টিউমার এর চিকিৎসা করে থাকে।
বিকিরণ থেরাপিঃ ব্রেন টিউমার এর টিউমার চিকিৎসার জন্য বিকিরণ
থেরাপি করা হয়। যা রেডিয়েশন এর মাধ্যমে করা হয়। বিকিরণ থেরাপির মাধ্যমে
বাইরে থেকে মেশিনের সাহায্যে রেডিয়েশন দেওয়া হয়ে থাকে।
কেমোথেরাপিঃ ওষুধের মাধ্যমে কেমোথেরাপি করা হয়। টিউমারের কোষের
বৃদ্ধি রোধ করতে ও মেরে ফেলার ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি করা হয়। কেমন
থেরাপির একটি পদ্ধতি হচ্ছে, শরীরের শিরার মধ্যে (IV) রয়েছে যা সুঁই
ব্যবহার করে বা ক্যাপসুল দিয়ে মৌখিকভাবে দেওয়া হয়। কেমোথেরাপি একটি
নির্দিষ্ট সময়ে মেনে দেয়া হয়।
আরো পড়ুনঃ জ্বর হলে করণীয় কি - জ্বরের ঔষধের নাম
উপরোক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও আরো অনেক রকম পদ্ধতির মাধ্যমে ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা
প্রদান করা হয়। আপনি যদি আপনার মধ্যে ব্রেন টিউমারের উপস্থিতি বুঝতে পারেন
সেক্ষেত্রে খুব দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবে। ডাক্তার যেভাবে আপনাকে
পরামর্শ দিবে সেভাবে কাজ করলে আপনার ব্রেন টিউমার ভালো হয়ে যাবে।
শেষ কথাঃ ব্রেন টিউমারের লক্ষণ - ব্রেন টিউমারের ঝুঁকির কারণ
উপরে ব্রেন টিউমারের লক্ষণ - ব্রেন টিউমারের ঝুঁকির কারণ,ব্রেন টিউমারের লক্ষণ,ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি। আশা করি আপনি যদি পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ে থাকেন তাহলে ব্রেন টিউমার সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা লাভ করতে পেরেছেন।
যদি আপনার কাছে মনে হয়ে থাকে আমাদের আজকের এই পোষ্টের মধ্যে আপনার প্রশ্নের সমস্ত উত্তর গুলো আমরা দিতে সক্ষম হয়েছি তাহলে অবশ্যই পোস্টের নিচে একটি মন্তব্য করে যাবেন কারণ আপনার একটি মন্তব্য আমাদের পোস্ট লেখার আগ্রহ কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে দেয়।
এছাড়াও আপনি চাইলে আমাদের এই পোস্টটি আপনার ফেসবুক আইডিতে এমন কি আপনার বন্ধুদের সাথেও শেয়ার করতে পারেন কারণ তারাও এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে ব্রেন টিউমারের লক্ষণ - ব্রেন টিউমারের ঝুঁকির কারণ এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এবং ধারণাগুলো পেয়ে যাবে। এছাড়াও এই সম্পর্কিত আরো পোস্ট পড়তে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি আপনি নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। ধন্যবাদ। আসসালামু আলাইকুম রাহমাতুল্লাহ।
ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url