ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ করতে হয়

প্রিয় পাঠক, আজকের এই আর্টিকেলটির মধ্যে ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ করতে হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেয়া হবে। তাই আপনি যদি সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলেই বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন ফাইভার মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ করতে হয়।

fiverr

ফাইভার (fiverr.com) মার্কেটপ্লেসটি ৫ ডলার মার্কেটপ্লেস হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ফ্রিল্যান্সার এবং ক্লায়েন্টদের জন্য অন্যতম নির্ভরযোগ্য একটি মার্কেটপ্লেস হিসেবে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করে নিয়েছে। বাংলাদেশে অন্যতম জনপ্রিয় এই মার্কেটপ্লেসটি হাজারো ফ্রিল্যান্সারকে ফ্রিল্যান্স কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। আজকে আমরা ফাইভারের কাজের পদ্ধতি, কাজ করার সুবিধা, নতুন ফ্রিল্যান্সাররা কীভাবে মার্কেটপ্লেসটিতে সফল হবে, তা নিয়ে আলোচনা করব।

পোস্ট সূচিপএঃ ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ করতে হয়

ফাইভার মার্কেটপ্লেসে কীভাবে কাজ করতে হয়

ভাইবার মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ করতে হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। কারণ আমরা আজকের এই পোস্টটির মধ্যে বিস্তারিত ভাবে আপনাকে জানাবো যে কিভাবে আপনি ফাইবার মার্কেটপ্লেশে কাজ করতে পারবেন। তাহলে চলুন সম্পূর্ণ পোস্টটি বিস্তারিত পড়ে নেয়া যাক এবং জেনে নেয়া যাক ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ করতে হয়।

আপওয়ার্ক মডেলের অন্যান্য মার্কেটপ্লেস থেকে ফাইভার সম্পূর্ণ আলাদাভাবে কাজ করে। ফাইভার ফ্রিল্যান্সারদের তৈরি করা গিগ বা সেবা প্যাকেজ আকারে বিক্রির সুযোগ করে দেয়। গিগ বিষয়টি একটু বুঝিয়ে বলছি। আপওয়ার্কে আমরা জেনেছি ক্লায়েন্টরা এসে জব পোস্ট করে এবং ফ্রিল্যান্সাররা বিড করে কাজটি পাওয়ার চেষ্টা করেন। ফাইভারের ক্ষেত্রে বিষয়টা হয় ঠিক উল্টো। 

আরো পড়ুনঃ মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ পাওয়া যায়

মার্কেটপ্লেসটিতে ফ্রিল্যান্সাররা তাঁদের তৈরি বিভিন্ন লোগো বা ডিজাইন প্রদর্শনের পাশাপাশি নির্দিষ্ট ডিজাইনের লোগো তৈরির জন্য কত ডলার খরচ হবে, তা উল্লেখ করে দেয়। ফলে কোনো বায়ারের লোগো দরকার হলে তিনি ফ্রিল্যান্সারদের সার্ভিস প্যাকেজগুলো (গিগ) দেখার পর নির্দিষ্ট গিগ কিনলেই ফ্রিল্যান্সারের কাছে কাজের অর্ডার চলে যাবে। তখন গিগটির নির্মাতা ফ্রিল্যান্সার ক্লায়েন্টের পাঠানো নির্দিষ্ট নকশার লোগো তৈরির কাজ বিশ্লেষণ করে বা সরাসরি কথা বলে লোগো তৈরি করে দেবে। 

নির্দিষ্ট সময়ে বায়ারদের চাহিদামতো লোগো জমা দিলেই অর্থ পাবেন ফ্রিল্যান্সারা। ফলে আপওয়ার্কের মতো কাজ পাওয়ার জন্য বিড করতে হবে না। সুন্দর ও ভালো রেটিং পাওয়া গিগগুলো ফাইভার নিজেই বায়ারদের ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকে। ফলে সুন্দর করে গিগ তৈরি করতে পারলে ফাইভারে ভালোভাবে নিজের অবস্থান তৈরি করা সম্ভব।

আশা করছি এতোটুকু পড়ার মাধ্যমে ভাইভার মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ করতে হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা আপনি পেয়ে গেছেন। এমনকি ফাইবার মার্কেটপ্লেশে কাজ করার সুবিধা সম্পর্কেও বিস্তারিত ধারণা পাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ করতে থাকুন।

ফাইভারে কাজ করার সুবিধা

নতুন ফ্রিল্যান্সারদের বেশ সহায়তা করে ফাইভার। মার্কেটপ্লেসটির অ্যালগরিদম এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের তৈরি করা বিভিন্ন কাজ মাঝমধ্যেই সার্চ ফলাফলের ওপরের দিকে দেখা যায়। ফলে বায়াররা সহজেই নতুন ফ্রিল্যান্সারদের তৈরি করা বিভিন্ন গিগ দেখতে পারেন। কি-ওয়ার্ড এবং ভালোমতো গিগ বানাতে পারলে নিজ থেকেই কাজের অর্ডার আসতে থাকে ফাইভারে। 

ফাইভারের অন্যতম সুবিধা হচ্ছে, আপনি যতটুকু কাজ পারেন, ঠিক ততটুকুই কাজের অর্ডার নিতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার দক্ষতা অনুযায়ী গিগ তৈরি করে প্রদর্শন করতে পারবেন মার্কেটপ্লেসটিতে। কোনো বায়ারের যদি সেই গিগ পছন্দ হয়, তবে আপনি টাকা পাবেন। ফলে আপনাকে দক্ষতার অতিরিক্ত কোনো কাজ করতে হবে না। যেমন অনেকেই আছেন বিজ্ঞাপন তৈরির খুঁটিনাটি পদ্ধতি না জানলেও শুধু ফেসবুক পেজের বিজ্ঞাপন তৈরি করতে পারেন। 

সমস্যা নেই, তিনি চাইলেই ফেসবুক পেজের বিজ্ঞাপনের উপযোগী একটি গিগ তৈরি করতে পারেন, যা কোনো বায়ারের পছন্দ হলে টাকা আয় করা যাবে। এ সুবিধা অন্য কোনো মার্কেটপ্লেসে পাওয়া যায় না। ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতা এবং বায়ারদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে ‘লেভেল ১ ’, ‘লেভেল ২ ’, ‘টপ রেটেড সেলার' ইত্যাদি লেভেল রয়েছে ফাইবারে। ফলে বায়াররা সহজেই ফ্রিল্যান্সারদের কাজের দক্ষতা সম্পর্কে ভালো ধারণা পেয়ে থাকেন।

অনেক সময় এমন হতে পারে যে ফ্রিল্যান্সারদের তৈরি গিগের চেয়েও বেশি কাজ দরকার বায়ারের। সমস্যা সমাধানে বায়ারদের সরাসরি গিগ নির্মাতা বা সেলারদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ মিলে থাকে ফাইভারে ।

ফাইভারে বায়ার রিকোয়েস্ট নামে একটি বিভাগ আছে, যেখানে বায়াররা নিজেদের চাহিদামতো কাজের তথ্য জমা দিতে পারে। শুধু তা–ই নয়, চাইলে ফ্রিল্যান্সারদের সঙ্গে কথা বলে কাজের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার পাশাপাশি দরও ঠিক করতে পারে। একটি বিষয় মনে রাখা ভালো, ফাইভারে বায়ারদের রক্ষার জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে বায়ররাও নিশ্চিন্তে কাজের অর্ডার দিয়ে থাকেন। অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সারদের জন্যও ফাইভারের রয়েছে একদল সহায়তাকারী। 

ফলে তাঁরাও স্বচ্ছন্দে মার্কেটপ্লেসটিতে কাজ করতে পারেন। ফাইভারের অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে বাংলাদেশে পেওনিয়ার পেমেন্ট গেটওয়ে থাকায় সহজেই মার্কেটপ্লেসটি থেকে অর্থ সংগ্রহ করা যায়। পাশাপাশি একই গিগে একই সময়ে একাধিক অর্ডার পাওয়া যায়। ফলে চাইলে একসঙ্গে একাধিক অর্ডার নিয়েও কাজ করা সম্ভব। এতে আপনার আয়ের পরিমাণও বেশি হবে। 

বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ফাইবার ব্লগে বিভিন্ন তথ্য পাওয়ার সুযোগ থাকায় নতুন ফ্রিল্যান্সাররা সহজেই দিকনির্দেশনা পেয়ে থাকেন। এত সুবিধার পাশাপাশি ফাইভারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে ব্যবহারকারীদের। অনেকের মতে, ফাইভার পুরোপুরি বায়ারকেন্দ্রিক মার্কেটপ্লেস। অর্থাৎ ফাইভার ফ্রিল্যান্সারদের তুলনায় বায়ারদের কথাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এ জন্য কোনো অর্ডার নিয়ে সমস্যা হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বায়ারদের পক্ষেই অবস্থান নেয় ফাইভার। 

মার্কেটপ্লেসটিতে কাজের খরচও অনেক বেশি। আপনি যত ডলারই আয় করেন না কেন, আয়ের ২০ শতাংশ দিতে হয় ফাইভারকে। এ ছাড়া কোন গিগের র‍্যাংক একবার হারিয়ে গেলে সেটিকে আবার সামনে আনা বেশ কষ্টকর। ভালো দক্ষতা অর্জন ছাড়া কোনো মার্কেটপ্লেসেই দীর্ঘদিন টিকে থাকা সম্ভব নয়। আর তাই ফাইভারে ভালো করতে হলে আপনার দক্ষতাকে সব সময় হালনাগাদ করতে হবে৷

অ্যাকাউন্ট খুলবেন যেভাবে

ফাইভার (fiverr.com) মার্কেটপ্লেসে প্রবেশ করে প্রথমেই ওয়েবসাইটের ডান দিকের ওপরে থাকা 'Become a Seller' বাটনে ক্লিক করে করতে হবে। এখানে ই-মেইল ঠিকানা, ইউনিক ইউজার নাম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে জয়েন বাটনে ক্লিক করতে হবে। এবার আপনার দেওয়া ই-মেইল ঠিকানা যাচাই করতে ফাইভার একটি ই-মেইল পাঠাবে। 

পাঠানো ই-মেইল বার্তায় ক্লিক করলেই আপনার দেওয়া ই-মেইল ঠিকানা যাচাই হয়ে যাবে। এবার ফাইবার প্রোফাইলের অ্যাকাউন্ট সেকশনে প্রবেশ করে আপনার নাম (জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা নাম), টেলিফোন নম্বর দেওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। টেলিফোন নম্বর যাচাই হয়ে গেলে স্টার্ট সেলিং বাটনে ক্লিক করে নিচের তথ্যগুলো বিস্তারিতভাবে লিখতে হবে।

ব্যক্তিগত তথ্যঃ ফাইভারের অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ‘পার্সোনাল ইনফো বিভাগে নিজের নাম, প্রোফাইল ছবি, নিজের এবং কাজের বিস্তারিত বর্ণনা, ভাষা ও লেভেল নির্বাচন করে কনটিনিউ অপশন নির্বাচন করতে হবে। ভাষা নির্বাচনের সময় অবশ্যই ইংরেজি নির্বাচন করতে হবে। চাইলে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাসহ একাধিক ভাষাও নির্বাচন করা যাবে।

আরো পড়ুনঃ ঘরে বসে টাকা ইনকাম করার উপায়

ছবিঃ পাসপোর্ট আকারের, সাধারণ ভঙ্গি ও বাঁকাভাবে দাঁড়ানো ছবি দেওয়ার বদলে ফ্রন্ট ফেসিং বা সামনে থেকে পুরো চেহারা ভালোভাবে দেখা যাওয়া ছবি দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ক্যামেরার দিকে সুন্দর করে তাকানো হালকা হাসিমুখের ছবি দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

জীবনীঃ ফাইভারে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য জীবনী বিভাগটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ক্লায়েন্টরা আপনার প্রোফাইলে প্রবেশ করে আপনার সম্পর্কে কিছু জানতে এই বিভাগে প্রবেশ করবে। আর তাই আপনার ব্যক্তিগত জীবন, কাজ ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সব তথ্য ভালোভাবে লিখতে হবে। 

এ জন্য বিভাগটিতে আপনার কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরার পাশাপাশি ক্লায়েন্টরা কেন আপনাকে কাজ দেবে, তার একটি বিবরণ লিখতে হবে। আপনার করা কাজের উল্লেখ্যযোগ্য তথ্যও যুক্ত করতে পারেন। জীবনী লেখার পরবর্তী ধাপে প্রফেশনাল ইনফো বিভাগে আপনার পেশা নির্বাচন করতে হবে। আপনি কত বছর এই পেশায় কাজ করছেন, তা জানানোর পাশাপাশি পেশাসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আপনার দুই থেকে পাঁচটি দক্ষতা উল্লেখ করতে হবে। 

এরপর স্কিলস বিভাগে আপনি কোন কোন বিষয়ে দক্ষ, তা উল্লেখ করে দক্ষতার লেভেলও জানাতে হবে। শিক্ষা বিভাগে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে। এ জন্য চাইলে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জমা দিতে পারেন। এবার কনটিনিউ বাটনে চাপ দিলেই আসবে লিংকড অ্যাকাউন্টস বিভাগ। এখানে আপনি চাইলে আপনার ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি অ্যাকাউন্ট যুক্ত করতে পারবেন। 

এরপর কনটিনিউ বাটনে চাপ দিলে দেখা যাবে অ্যাকাউন্ট সিকিউরিটি বিভাগ। আপনার ই-মেইলে এবং টেলিফোন নম্বর যাচাই করা থাকায় এখানে আপনাকে আর বাড়তি কোনো তথ্য দিতে হবে না। এবার কনটিনিউ এবং গিগ তৈরির বাটনে ক্লিক করলেই ফাইভারে অ্যাকাউন্ট তৈরির পাশাপাশি গিগ তৈরির পেজ চালু হবে।

গিগ তৈরি করার উপায় 

প্রথম ধাপঃ ওভারভিউ বিভাগে প্রথমেই আপনাকে গিগের একটি শিরোনাম দিতে হবে। ফাইভারে সাধারণত I will' এই শব্দটি দিয়ে গিগ শুরু হয়। যেমন আপনি যদি লোগো ডিজাইনার হন, তাহলে আপনার গিগটি হবে এমন I will Design Logo for your company'। অর্থাৎ আপনার গিগ সাজাতে হবে I will' শব্দটির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাক্য দিয়ে। এরপর গিগটির বিভাগ এবং উপবিভাগ নির্বাচন করতে হবে। সেবার ধরন বিভাগে আপনি কোন ধরনের সেবা নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী, তা নির্বাচন করতে হবে। 

এরপর গিগ মেটাডেটা বিভাগে গিগ-এর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ অপশনগুলো নির্বাচন করতে হবে। এবার আপনার গিগের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ৬টি ট্যাগ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনি যে ধরনের গিগ তৈরি করবেন, সে ধরনের গিগ নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের দেওয়া ট্যাগগুলো দেখে ধারণা নিতে পারেন। তবে কারও গিগ কখনোই নকল বা কপি করতে যাবেন না, এতে করে আপনার অ্যাকাউন্ট বাতিল হতে পারে। এ অংশটি শেষ হলে সেভ করে কনটিনিউ অপশনে ক্লিক করতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপঃ প্রাইসিং বিভাগে আপনাকে গিগের প্যাকেজ বানাতে হবে, অর্থাৎ যে সেবাটি দেবেন, তাঁর জন্য আলাদা তিনটি প্যাকেজ বানাবেন। চাইলে একটি প্যাকেজও বানাতে পারেন, তবে গিগের জন্য তিনটি প্যাকেজ থাকলে ভালো হয়। প্যাকেজ তৈরির পর সেগুলোর নাম, ক্লায়েন্টরা কোন ধরনের সেবা পাবে, তা উল্লেখ করার পাশাপাশি কোন প্যাকেজের জন্য কত দিন সময় লাগবে, তা-ও জানাতে হবে। 

প্রতিটি প্যাকেজের নিচে বেশ কিছু অপশন দেখাবে ফাইভার, প্যাকেজের বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা অপশনগুলো নির্বাচন করতে হবে। এবার প্যাকেজগুলো ব্যবহারের জন্য আপনি কত টাকা নেবেন, তা আলাদাভাবে উল্লেখ করতে হবে। আপনি চাইলে প্যাকেজগুলোর সঙ্গে অতিরিক্ত সেবাও দিতে পারেন। এ জন্য এক্সট্রা সার্ভিস অপশনে সহায়ক সেবাগুলোর নাম লিখে সেভ এবং কনটিনিউ অপশন নির্বাচন করতে হবে ।

তৃতীয় ধাপঃ ডেসক্রিপশন বিভাগে আপনার তৈরি গিগটির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য লিখতে হবে। আপনার গিগটি কোন কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে, কেনার পর ক্লায়েন্ট কোন ধরনের সহায়তা পাবে বা বিক্রয়োত্তর সেবার পরিধি কত দিন, তা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। চাইলে আপনার তৈরি গিগের মতো যাঁরা গিগ বানান, তাঁদের দেওয়া তথ্যগুলো পড়ে দেখতে পারেন। এরপর গিগ বিষয়ে সচরাচর ক্লায়েন্টরা যেসব প্রশ্ন করেন, সেগুলোর উত্তর লিখতে হবে। সর্বোচ্চ ১০টি প্রশ্নের উত্তর এ বিভাগে যুক্ত করে দেওয়া যাবে।

চতুর্থ ধাপঃ রিকোয়ারমেন্ট বিভাগে গিগ অর্ডার করলে আপনার যে ধরনের তথ্য বা সোর্স দরকার হবে, তার তথ্য উল্লেখ করতে হবে। যেমন কোনো ক্লায়েন্ট যদি ওয়েব ডিজাইনের জন্য আপনার গিগ কেনেন, তবে আপনাকে তার ওয়েবসাইটের ডোমেইন ও হোস্টিংয়ের তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ছবি বা নিবন্ধও পাঠাতে হবে। কারণ, এসব তথ্য ছাড়া আপনি নির্দিষ্ট সময়ে তার নির্দেশনামতো কাজ করতে পারবেন না। রিকোয়ারমেন্ট বিভাগে বিষয়গুলো আগে থেকে উল্লেখ করে দিলে কোনো ক্লায়েন্ট তথ্য সরবরাহ করতে রাজি না হলে আপনার গিগ অর্ডার করতে পারবে না।

আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

পঞ্চম ধাপঃ ইমেজ গ্যালারি বিভাগে আপনার সেবার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ভিডিও এবং তিনটি ছবি যুক্ত করা যাবে। ছবিগুলো এমন হতে হবে, যেন সেগুলো দেখেই ক্লায়েন্টরা আপনার সেবা সম্পর্কে ভালো ধারণা পেতে পারেন। ছবিতে গিগের মূল তথ্যগুলো টেক্সট আকারে লেখার পাশাপাশি সহায়ক ছবি বা আইকন ব্যবহার করতে হবে। গিগ ইমেজগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই চেষ্টা করবেন গিগ ইমেজগুলোর মান যেন ভালো হয়। সেলারদের গিগ ইমেজের মানোন্নয়নে এই বিভাগে ফাইভারের ইমেজ ব্যবহারের নীতিমালা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। ভালো মানের গিগ ইমেজ বানানোর জন্য আপনি চাইলে নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করতে পারেন।

গ্যালারি বিভাগের নিচে আপনি দুটি পিডিএফ ডকুমেন্ট যুক্ত করতে পারবেন। ফলে চাইলেই আপনার বিভিন্ন কাজ নিয়ে ডকুমেন্ট তৈরি করে পিডিএফ ফরম্যাটে যুক্ত করতে পারবেন, যা আপনার পেশাগত পোর্টফোলিও হিসেবে কাজ করবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আপনার গিগটি পাবলিশ হয়ে যাবে এবং ফাইভার আপনাকে গিগটির লিংক দেবে। 

আপনি চাইলে প্রোফাইল বিভাগ থেকে যেকোনো সময়ে গিগটির মানোন্নয়ন করতে পারবেন। এমনকি গিগে কতজন ক্লিক করেছে বা ক্লায়েন্টদের মতামতও জানা যাবে। অ্যাকাউন্ট চালুর শেষ ধাপে অনেকের কাছে ট্যাক্স ফরম চাইতে পারে ফাইভার। তবে চিন্তার কিছু নেই, আপনি যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসী নন-অপশনটি নির্বাচন করে সেভ করে দিলেই ট্যাক্স ফর্মে কোনো তথ্য দিতে হবে না ৷

সর্বশেষ কথা-ফাইবার মার্কেটপ্লেশে কিভাবে কাজ করতে হয়

এতক্ষণ যে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ছিলেন সেই পোস্টটি ছিল ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ করতে হয় এই সম্পর্কে। পোষ্টির মধ্যে ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ করতে হয় এই সম্পর্কে এমনকি ফাইভারে কাজ করার সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেয়া হয়েছে। আশা করছি সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ করতে হয় এবং ফাইভারে কাজ করার সুবিধা সম্পর্কেও বিস্তারিত ধারণা পেয়ে গেছেন।

আপনার কাছে যদি মনে হয়ে থাকে আমাদের এই ব্লক পোস্টটির মধ্যে ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ করতে হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করা হয়েছে তাহলে অবশ্যই পোস্টের নিচে একটি মন্তব্য করে যাবেন, কারণ আপনার একটি মন্তব্য আমাদের পোস্ট লেখার আগ্রহ কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে দেয়। এছাড়াও আপনি চাইলে আমাদের এই পোস্টটি আপনার বন্ধুদের সাথে এমনকি আপনার facebook.com আইডিতে শেয়ার করতে পারেন কারণ তারাও এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কিভাবে কাজ করতে হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবে। এছাড়াও এই সম্পর্কিত আরো পোস্ট করতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url