চোখ উঠলে করণীয় কি - চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা
প্রতিটি মানুষের দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে চোখ। আর এই চোখেই বিভিন্ন ধরনের ব্যথা এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ আক্রান্ত হয়। তাই প্রত্যেকটি মানুষের এই তার এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা এবং সমস্ত সমস্যার তাৎক্ষণিক ভাবে সমাধান করা।
আর আজকের পোস্টে চোখ উঠলে করণীয় কি হবে এবং চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কেই বিস্তারিত আলোচনা করা হবে কারণ এই চোখ ওঠা সমস্যাটি মানুষের দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে বিস্তার করে। তাই এই সমস্যাটি বৃদ্ধি হওয়ার পূর্বে তা ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে কমিয়ে নিতে হবে। তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং জানুন চোখ উঠলে করণীয় কি এবং চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা গুলো কি এই সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ চোখ উঠলে করণীয় কি এবং চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা
- চোখ উঠলে করণীয় কি
- চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা
- চোখ উঠার ঔষধ এর নাম কি
- চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করতে হয়
- চোখ উঠা কি ছোঁয়াচে রোগ
- চোখ উঠলে কি দোয়া পাঠ করতে হয়
- সর্বশেষ কথা-চোখ উঠলে করণীয় কি
চোখ উঠলে করণীয় কি
চোখ একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরী অঙ্গ আর এই অঙ্গে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তার মধ্যে একটি মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে চোখ ওঠা। চোখ ওঠার সমস্যাটি প্রায় একটি সিজনে দেখা দেয় যে সিজনের অনেকেরই চোখ উঠা সমস্যাটি হয়। তবে এই সমস্যাটি সমাধান করার জন্য কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে বা আপনাকে সাবধানে সাথে কিছুদিন চলাফেরা করতে হবে। যতদিন না আপনার চোখ ওঠা ভালো হয়। চোখ উঠলে আপনার করণীয় হবে।
আরো পড়ুনঃ চোখের এলার্জি দূর করার উপায়
- সাবান পানি দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর হাত পরিষ্কার করা
- চোখ উঠলে কালো চশমা ব্যবহার করতে হবে
- এবং কোন কারনে চোখ ভেজা থাকলে চোখটি শুতে পার দিয়ে মুছে পরিষ্কার করতে হবে
- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে হবে চোখে
- চোখ উঠলে ভিটামিন সি এর পাশাপাশি সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে
- এই সমস্যায় আক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে
- নিজের ব্যবহার করা প্রসাধন সামগ্রী ও ব্যক্তিগত কাপড়চোপড় অন্য কেউ যাতে ব্যবহার না করে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা
চোখ উঠলে আপনার ঘরোয়া চিকিৎসা হবে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের পাতা আস্তে আস্তে খুলতে হবে। এবং পরিষ্কার একটি তুলা বা কাপড়ের টুকরো (নরম সুতির কাপড়) গরম পানিতে ডুবিয়ে সেটাকে ভালোভাবে চিপে নিয়ে আলতোভাবে চোখের পাতা ও পাপড়ি গুলো পরিষ্কার করতে হবে। প্রত্যেকদিন কয়েকবার করে এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করতে হবে।
তাহলেই খুব দ্রুত আপনার চোখ ওঠার সমস্যাটি সমাধান হয়ে যাবে। এ ধরনের সমস্যা হলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের পাতা খুলতে খুবই কষ্ট হয় এবং চোখের পাতা লাল হয়ে ফুলে যায় আর এই ভুলে যাওয়ার কারণে চোখ বন্ধ হয়ে থাকে এমনকি দৃষ্টি ঝাপসা দেখতে পাওয়া যায়। এ ধরনের লক্ষণ গুলো আপনার চোখে যদি খেয়াল করেন তাহলে বুঝে নেবেন আপনার চোখ ওঠা এই সমস্যাটি হয়েছে।
ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনার চোখ ওঠা যদি ভালো না হয় তাহলে
আপনার পার্শ্ববর্তী কোন ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী
কিছুদিন চলাফেরা করলে আপনার চোখ ওঠার জনিত সমস্যাটি সমাধান হয়ে যাবে। আশা করছি
তাহলে চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা কিভাবে করবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা হয়ে
গেছেন।
চোখ উঠার ঔষধ এর নাম কি
এখন পর্যন্ত চোখ ওঠার কোন প্রকার ট্যাবলেট ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ড্রপ এর মাধ্যমে চোখ ওঠা সমস্যার সমাধান করা যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে জানা যায় বা দেখা যায় ভাইরাসের আক্রমণের ফলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটে। আর্থিক এজন্যই দিনে তিন থেকে চারবার এন্টিবায়োটিক ড্রপ ক্লোরাম ফেনিকল ব্যবহার করতে হয়।
আরো পড়ুনঃ চোখের চুলকানি দূর করার উপায়
তাহলে চোখের ভেতরে যত ধরনের ময়লা আবর্জনা জমা হয় তা অতি দ্রুতই পরিষ্কার করে
ফেলে। চোখে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ না হলে সেকেন্ডারি ইনফেকশন প্রতিরোধ করার জন্য
এই অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপটি ব্যবহার করা যায়। এমনকি চোখে যদি চুলকানি থাকে
তাহলে এন্টিহিস্টামিন সেবন বা গ্রহণ করা যেতে পারে। আশা করছি তাহলে
চোখ উঠার ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে গেছেন।
চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করতে হয়
চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করতে হয় জেনে নিন। ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী যদি কারো চোখ ওঠে তাহলে প্রতিদিন এই ড্রপটি ব্যবহার করতে হয়। এনগাট ০.৫% আই ড্রপস (Engatt 0.5% Eye Drops) এটি একটি এন্টিবায়োটিক ড্রপ যা চোখের সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। যেমন মনে করেন কনজেন্ট্টিভিটিস।
তবে এটি জেনে রাখা দরকার এই ড্রপের মাধ্যমে চোখে যে কোন সংক্রমণ জনিত সমস্যার সমাধানের জন্য এই ড্রপটি ব্যবহার করা হয়। শুধুমাত্র ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমণের জন্য এই ড্রপটি ব্যবহার করা হয় না এই এন্টিবায়োটিক ড্রপের দ্বারা চোখে যত ধরনের সংক্রমণ আছে সবকিছু চিকিৎসা করবে এই ড্রপের মাধ্যমে। আশা করছি তাহলে এতক্ষণে জেনে গেছেন চোখ ওঠে কোন ড্রপ ব্যবহার করতে হয় বা করতে হবে এই সম্পর্কে।
চোখ উঠা কি ছোঁয়াচে রোগ
আপনি জানতে চেয়েছেন চোখ উঠা কিছু আছে রোগ হ্যাঁ এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ এবং খুবই মারাত্মক। এ রোগটিকে মারাত্মক বলার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে তার মধ্যে কনজাংটিভাইটিস এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শের মাধ্যমে এই ছোঁয়াচে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে।
অর্থাৎ এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি তার চোখে হাত দিয়ে স্পর্শ করার পর সে হাত দিয়ে যদি অন্য কোন একটি জিনিস স্পর্শ করে এবং পরবর্তীতে সে জিনিসটি যদি অন্য কেউ তার হাত দিয়ে স্পর্শ করে এবং সেই হাত নিজের চোখে দেয় তাহলে সুস্থ ব্যক্তিটিও এ রোগে আক্রান্ত হবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন চোখ ওঠা কতটা মারাত্মক এবং ছোঁয়াচে রোগ।
চোখ উঠলে কি দোয়া পাঠ করতে হয়
যদি কারো চোখ ওঠে তাহলে তাকে এই আমল গুলো করতে হবে। কারণ এই আমল গুলো কোরআনুল
কারীমে উল্লেখিত করা আছে। আল্লাহ তাআলার আদেশ-নিবেশ পালন করে আপনি যদি আপনার
চোখের যে কোন সমস্যার সমাধান করতে চান তাহলে এই আমল গুলোর নিয়মিত করতে হবে।
কেউ যদি কোন কারনে তার চোখে ব্যথা অনুভব করে তাহলে সে যেন এই আয়াতটি প্রত্যেক
নামাজের পর পাঠ করে। কোরআনুল কারীমে এই আয়াতটি পড়ার মাধ্যমে চোখের ব্যথা
থেকে মুক্ত করার উপায় বলে দেয়া আছে। সূরা ক্বফ এর ২২ নম্বর আয়াত।
আরো পড়ুনঃ রাতকানা রোগ কেন হয় জানুন
আরবি উচ্চারণঃ
لَقَدْ كُنتَ فِي غَفْلَةٍ مِّنْ هَذَا فَكَشَفْنَا عَنكَ غِطَاءكَ فَبَصَرُكَ الْيَوْمَ حَدِيدٌ
বাংলা উচ্চারণঃ "লাক্বাদ কুংতা ফি গাফলাতিম মিন হাজা ফাকাশাফনা আংকা গিত্বাআকা ফাবাচারুকাল ইয়াওমা হাদিদ"।
আমলঃ যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাজের পর সুরা ক্বফ এর ২২ নং আয়াত ৩বার পড়বে। তার চোখের ব্যথা দূর হয়ে যাবে।
আরবি উচ্চারণঃ
للّهمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِيْ اللَّهمَّ عَافِنِيْ فِي سَمْعِيْ اللَّهمَّ عَافِنِي فِي بَصَرِي لَا إلهَ إلَّا أنْت
বাংলা উচ্চারণঃ "আল্লাহুম্মা আ-ফিনি ফি বাদানি, আল্লাহুম্মা আ-ফিনি ফি সাম-ই, আল্লাহুম্মা আ-ফিনি ফি বাসারি, লা-ইলাহা ইল্লা আনতা"।
বাংলা অনুবাদঃ হে আল্লাহ! আমার দেহ সুস্থ রাখুন। হে আল্লাহ! আমাকে সুস্থ রাখুন আমার শ্রবণ ইন্দ্রিয়ে। হে আল্লাহ! আমাকে সুস্থ রাখুন আমার দৃষ্টিশক্তিতে। আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নাই।
আশা করছি উপরোক্ত এই আয়াতগুলো নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার পর পাঠ করলে
আপনার চোখে কোন ধরনের সমস্যা থাকবে না এবং চোখে কোন ধরনের ব্যথা অনুভব করবেন
না।
সর্বশেষ কথা-চোখ উঠলে করণীয় কি
এতক্ষণ যে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ছিলেন সেই পোস্টটি ছিল চোখ উঠলে করণীয় কি এবং চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে চোখ উঠা সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য আপনি পেয়ে গেছেন। এখন আপনি চোখ উঠলে করণীয় কি এবং চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য গুলো নিজেও জানলেন এবং অন্য কেউ জানাতে পারবেন।
পোস্টটি আপনার কাছে যদি একটু ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই পোস্টের নিচে একটি মন্তব্য করে যাবেন। কারণ আপনার একটি মন্তব্য আমাদের পোস্ট লেখার আগ্রহ কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে দেয়। এবং আপনি চাইলে আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন, কারণ তারা এ পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে চোখ উঠলে করণীয় কি এবং চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে যাবে। এছাড়াও এই সম্পর্কিত আরও তথ্য পড়তে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url