যক্ষা রোগের লক্ষণ - যক্ষা রোগের কারণ - যক্ষা রোগের চিকিৎসা
আপনি যদি না জেনে থাকেন যক্ষা রোগের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে এবং যক্ষা রোগ কি কারণে হয় এবং এর চিকিৎসা কি তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্যই। কারণ আমরা আজকের এই পোষ্টের মধ্যে যক্ষা রোগের লক্ষণ, যক্ষা রোগের কারণ এবং যক্ষা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।
এছাড়াও এই পোষ্টের মধ্যে যক্ষার রোগ সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং জানুন যক্ষা রোগের লক্ষণ, যক্ষা রোগের কারণ এবং যক্ষা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ও ধারণা। তাহলে দেরি না করে চলুন আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ে নেয়া যাক।
পোস্ট সূচীপত্রঃ যক্ষা রোগের লক্ষণ, যক্ষা রোগের কারণ এবং যক্ষা রোগের চিকিৎসা।
- যক্ষা রোগ হওয়ার কারণ কি
- যক্ষা রোগের লক্ষণ গুলো কি কি
- যক্ষা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন
- যক্ষা কি ছোঁয়াচে রোগ
- যক্ষা রোগের ওষুধের নাম
- সর্বশেষ কথা-যক্ষা রোগ হওয়ার কারণ
যক্ষা রোগ হওয়ার কারণ কি
২০০৮ সালে কয়েকজন প্রত্নতত্ত্ববিদ দুটি ৯ হাজার বছরের পুরনো কঙ্কাল খুঁজে পেয়েছেন, যেখানে মাইকোব্যাকটিরিয়াম টিউবারকুলোসিসের অস্তিত্ব মিলেছে। এই মাইকোব্যাকটিরিয়াম যক্ষ্মা রোগের কারণ। যক্ষা খুবই মারাত্মক একটি রোগ যে রোগের কথা মানুষ শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে যায়। কারণ এই মারাত্মক রোগের কারণে আমাদের দেশে বা অন্যান্য দেশে অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করে।
আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া বা খবরে কাগজ ঘাটাঘাটি করেন তাহলে এই যক্ষা সংক্রান্ত রোগে প্রচুর মানুষ তার জীবন হারিয়েছে। কারণ মরণব্যাধি এই যক্ষা মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে তাকে তার জীবন কেড়ে নেয়া পর্যন্ত অবিচল হয়ে থাকে। আর এই মরণব্যাধি যক্ষা যদি আপনার শরীরে একবার প্রবেশ করে তাহলে আপনি আপনার জীবনটাকে প্রায়ই পরিত্যাগ করে দিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ডেঙ্গু রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়
আপনি যদি না জেনে থাকেন যক্ষা হওয়ার কারণ গুলো কি কি তাহলে এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে জেনে নিন। কারন আপনি যদি না জানেন কোন কোন কারন গুলো বা কোন কোন বিষয় না ফলো করে চলাফেরা করলে যক্ষা জনিত রোগ আপনার শরীরে বাসা বাঁধতে পারে তাহলে আপনি আপনার মরণব্যাধি যক্ষা জনিত সমস্যাটি এড়াতে পারবেন না।
এই রোগটি ছড়ায় বিশেষ করে যক্ষা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি হাসি বা কাশি দেয় এবং আশেপাশে কোন ব্যক্তি থাকলে সেও যক্ষা রোগে আক্রান্ত হবে। গবেষণায় দেখা যায় একজন আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে ১০ জন আক্রান্ত হতে পারে। তাই অবশ্যই আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরে থাকতে হবে। এই যক্ষা রোগ হওয়ার মূল কারণ হলো ধূমপান সেবন করা। যে ব্যক্তি অতিমাত্রায় ধূমপান গ্রহণ করবে সে ব্যক্তি যক্ষা রোগে আক্রান্তভবে। এমনকি আস্তে আস্তে তার ফুসফুস নষ্ট হয়ে যাবে।
ধূমপানের যে ক্ষতিকারক ধোয়া মানুষের শরীরের ভেতরে প্রবেশ করে সেই ধোয়া ফুসফুসে গিয়ে মানুষের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি করে তার মধ্যে একটি বড় ধরনের মারাত্মক মরণব্যাধি সমস্যা হচ্ছে যক্ষা। অনেক সময় দেখা যায় যক্ষা আক্রান্ত ব্যক্তি কাশতে কাশতে কফের সাথে রক্ত উঠিয়ে দেয়। এমন কি সেই ব্যক্তি তাৎক্ষণিক মৃত্যুও হতে পারে। তাই আমরা সবাই "মাদককে না বলি সুস্থ জীবন গড়ি"। আশা করি তাহলে এতক্ষণে জানতে পেরেছেন যক্ষা রোগ হওয়ার কারণগুলো সম্পর্কে।
যক্ষা রোগের লক্ষণ গুলো কি কি
কোন কোন কারণগুলো বা লক্ষণ গুলোর মাধ্যমে বুঝতে পারবেন আপনি যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। কারণ লক্ষণগুলো যদি আপনি না জানেন তাহলে বুঝতে পারবেন না যে আপনি কোন রোগে আক্রান্ত। তাই অবশ্যই যেকোন রোগের লক্ষণগুলো আপনার জানা অত্যন্ত জরুরি। কারণ লক্ষণগুলো দ্বারাই আপনি আপনার দেহে কোন ধরনের রোগ বাসা বেধেছে এই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবেন।
আর আজকে আমরা এটাই জানাবো যক্ষা রোগের লক্ষণ কোন কোন লক্ষণ গুলো দেখার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার দেহের যক্ষা জনিত এই মরণব্যাধি বাসা বেধছে। এবং লক্ষণ গুলো বোঝার পাশাপাশি অতি দ্রুত আপনার পার্শ্ববর্তী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা নেয়া শুরু করুন। তাহলে চলুন জেনে নিয়ে কোন কোন কারণগুলো বা লক্ষণগুলো দ্বারা বোঝা যায় যে যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
- দীর্ঘস্থায়ী কাশি, অর্থাৎ দীর্ঘদিন যাবত একনাগারে কাশতে থাকা। অনেক সময় কাশির কফ এর সাথে রক্ত বের হয়ে আসে।
- জ্বর, একবার দেহে যাওয়ার প্রবেশ করলে সেটা আর ভালো হতে চাই না। ঘন ঘন আসে আর যায়।
- রক্তাক্ত শ্লেষ্মার সাথে কাশি
- ওজন হ্রাস, যক্ষা রোগে আক্রান্ত হলে খুব দ্রুত আপনার ওজন কমে যাবে। এবং আপনার দেহের গঠন কাঠামো খুবই খারাপ অবস্থা হয়ে যাবে।
উপরোক্ত যে লক্ষণগুলো দেয়া হলো এ লক্ষণ গুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার দেহে প্রবেশ
করা যক্ষা জনিত করতে পারবেন বা বুঝতে পারবেন। যদি আপনার বা অন্য কারো দেহে বা
শরীরে এই ধরনের সমস্যাগুলো বা লক্ষণ গুলো দেখতে পান তাহলে বুঝে নিবেন তিনি বা
আপনি যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আশা করছি তাহলে এতক্ষণে জেনে গেছেন যক্ষা
রোগের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত।
যক্ষা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন
যক্ষা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে একটি প্রতিষ্ঠানের ডঃ সোমাশেখর বলেছেন, এই রোগের ওষুধ সরাসরি ভাবে কোন রোগীকে দেওয়া নিয়ম নেই। তবে, এ রোগে আক্রান্ত রোগীর ওষুধ খাওয়ার উপর ভালোভাবে নজরদারি করতে হয়।প্রতিটি জটিল রোগের মতো এই যক্ষ্মার ওষুধও শারীরিক লক্ষণ প্রশমিত হওয়া পর্যন্ত খাওয়া প্রয়োজন। তবে, শারীরিক লক্ষণ প্রশমিত হলে আর ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন পরে না। যক্ষা রোগের চিকিৎসায় বিভিন্ন বিষয় যুক্ত থাকার কারণে প্রয়োজন-সাপেক্ষে রোগী-কেন্দ্রিক প্রয়াস গ্রহণের প্রয়োজন। যক্ষা আক্রান্ত রোগীকে ওষুধ খাওয়ার জন্য প্রত্যেকদিন চিকিৎসালয় বা চিকিৎসা কেন্দ্রে আসা প্রয়োজন।
চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, সরকারিভাবে যক্ষার ওষুধ এবং রোগ-নির্ণয়ে করতে কোন ধরনের খরচ লাগে না। যক্ষায় আক্রান্ত রোগীকে সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে ওষুধ ও রোগ নির্ণয়ের জন্য উপস্থিত হতে হবে। যদি কোনও রোগী বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করান, সেক্ষেত্রেও চিকিৎসার ধরন ও ওষুধ অভিন্ন। আশা করছি তাহলে এতক্ষণে জেনে গেছেন যক্ষা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে। এবং কোথায় গেলে এই ধরনের চিকিৎসা গুলো পাবেন এই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণাও পেয়ে গেছেন এতটুক পড়ার মাধ্যমে।
যক্ষা কি ছোঁয়াচে রোগ
হ্যাঁ যক্ষা একটি ছোঁয়াচে রোগ। এই রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে মানুষের দেহে তারপর ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়ে। আপনি যদি কোন আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যান বা তার শরীরে স্পর্শ করেন তাহলে সেই আক্রান্ত ব্যক্তির যক্ষা রোগটি আপনার দেহে প্রবেশ করবে তারপর আস্তে আস্তে আপনার ফুসফুসে গিয়ে যক্ষা রোগে আক্রান্ত করে দেবে।
এমনকি এই রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি কাশির মাধ্যমেও মানুষের দেহে প্রবেশ করে। আক্রান্ত ব্যক্তি যদি জনসমাগমে হাসি বা কাশি দেয় তাহলে তার সংক্রামিত রক্ষা মানুষের দেহে প্রবেশ করবে। আবার কোন আক্রান্ত ব্যক্তি যদি কথাও বলে তার কথার মাধ্যমেও এ যক্ষা রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। তাই যথাক্রান্ত ব্যক্তিকে সবসময় প্রটেকশন বা মাক্স ব্যবহার করতে। হবে এবং আপনাকে সচেতন থাকতে হবে আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে। আশা করি তাহলে জানতে পেরেছেন যক্ষা ছোঁয়াচে রোগ কিনা।
যক্ষা রোগের ওষুধের নাম
এখন জানুন ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী কোন ওষুধ দিয়ে যক্ষা রোগের জন্য ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ কোন ওষুধ সেবন করলে যক্ষা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ইতিহাস পড়লে জানা যায় গত ৫০ বছরে এই যক্ষা রোগের রোগের জন্য শুধুমাত্র তিনটি ওষুধ আবিষ্কার হয়েছে।
আর এই ওষুধগুলো সেবনের মাধ্যমে যথাক্রান্ত ব্যক্তি খুব দ্রুতই মুক্তি পেয়ে যায়। যক্ষা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এই তিনটি ওষুধ আপনি সেবন করতে পারেন। তবে অবশ্যই ওষুধগুলো সেবন করার পূর্বে আপনার পার্শ্ববর্তী যে কোন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন। অথবা আপনি যদি উপরোক্ত লক্ষণ গুলো আপনার শরীরে দেখতে পান তাহলে অবশ্যই আপনার পার্শ্ববর্তী যে কোন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এগিয়ে যক্ষ্মা নির্ণয় করুন।
আরো পড়ুনঃ কাশির সিরাপের নাম কি
এবং নির্ণয় করার শেষে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন। তবে জেনে রাখুন
কোন তিনটি ওষুধ সেবনের মাধ্যমে যজ্ঞা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নিম্নে যে
তিনটি ওষুধের নাম দেয়া হলো সেই তিনটি ওষুধ হল যক্ষা রোগের।
- এফডিএ
- বেডাকুলাইন
- লাইনজোলিড
সর্বশেষ কথা-যক্ষা রোগ হওয়ার কারণ
এতক্ষণ যে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ছিলেন সেই পোস্টটি ছিল যক্ষা রোগের লক্ষণ, যক্ষা রোগের কারণ এবং যক্ষা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে যক্ষা রোগ সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য আপনি পেয়ে গেছেন। এখন আপনি যক্ষা রোগের লক্ষণ, যক্ষা রোগের কারণ এবং যক্ষা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য গুলো নিজেও জানলেন এবং অন্য কেউ জানাতে পারবেন।
পোস্টটি আপনার কাছে যদি একটু ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই পোস্টের নিচে একটি মন্তব্য করে যাবেন। কারণ আপনার একটি মন্তব্য আমাদের পোস্ট লেখার আগ্রহ কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে দেয়। এবং আপনি চাইলে আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন, কারণ তারা এ পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে যক্ষা রোগের লক্ষণ, যক্ষা রোগের কারণ এবং যক্ষা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে যাবে। এছাড়াও এই সম্পর্কিত আরও তথ্য পড়তে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url