ইসলামে জন্ম নিয়ন্ত্রণ কি জায়েজ আছে - জন্ম নিয়ন্ত্রণ

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটি ইসলামে জন্ম নিয়ন্ত্রণ কি জায়েজ আছে কিনা এই সম্পর্কে।জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য ইসলাম কি বলে এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এই পোষ্টের মধ্যে। তাই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে জানুন ইসলামে জন্ম নিয়ন্ত্রণ কি জায়েজ আছে কিনা এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

islamic jonmo niyontron

এছাড়াও এই পোষ্টের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য কি ব্যবহার করতে হয় সেই সম্পর্কেও বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হবে। তাই দেরি না করে চলুন আর্টিকেল পড়ে জেনে নেয়া যাক ইসলামে জন্ম নিয়ন্ত্রণ কি জায়েজ আছে কিনা এই সম্পর্কে।

পেজ সূচিপত্রঃ ইসলামে জন্ম নিয়ন্ত্রণ কি জায়েজ আছে 

ইসলামে জন্মনিয়ন্ত্রণ কি জায়েজ আছে

এখন জেনে নিন ইসলামে জন্মনিয়ন্ত্রণ কি জায়েজ আছে কিনা এই সম্পর্কে এবং এটি জানার পর আরো জানবেন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কি কত প্রকার এবং কি কি এই সম্পর্কে এছাড়াও জন্মপত্র নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কোনটা ভালো এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে নিম্নে। তাই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন তাহলেই আপনার অজানা তথ্যগুলো জানতে পারবেন। 

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কি? এবং ইসলামে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করা কি জায়েজ আছে? আর ঠিক তাদের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্যই আজকের পোস্টটি লেখা হয়েছে। তাহলে এখন জেনে নিন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করা ইসলামে জায়েজ আছে কিনা এই সম্পর্কে। আপনি যদি ভেবে থাকেন, আপনার সন্তান জন্ম নেয়ার পর তাকে খাওয়াবো কিভাবে, পরাবো কিভাবে।


ঠিক এই চিন্তা ভাবনা গুলো করে যদি আপনি জন্ম নিয়ন্ত্রণ করেন তাহলে সেটি অবশ্যই সম্পূর্ণরূপে হারাম বলে প্রমাণিত হয়। কারণ রিজিকের মালিক হলেন আল্লাহ তা'আলা এবং রিজিকদাতা হলেন আল্লাহ তা'আলা। আর তাই এগুলো ভেবে কখনোই জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করবেন না। হ্যাঁ আপনি কখন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন বা ইসলাম কখন আপনাকে এই জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে বলে এখন সেটি জানুন। আপনি দুইটি কারণে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবেন। 

প্রথমতঃ  যেটি হলো এই মুহূর্তে যদি স্ত্রীর গর্ভে সন্তান জন্ম নেয় বা সন্তান আসে তাহলে আপনার স্ত্রীর বড় ধরনের বিপদ হতে পারে বা সন্তান জন্মগ্রহণ করলে আপনার স্ত্রীর বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে এবং শারীরিক কোন কারণে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।

দ্বিতীয়ত হলঃ আগে একটি সন্তান হয়েছে এবং তার অধিকার রয়েছে তার মায়ের বুকের দুধ দুই বছর পান করা। আপনারা হয়তো জানেন "মায়েরা তার সন্তানদের দুধ পান করাবে দুই বছর" এই দুই বছরের মধ্যে যদি মা গর্ভধারণ করেন তাহলে আগের সন্তান অসুস্থ হয়ে যেতে পারে অথবা তার অধিকার ক্ষুন্ন হতে পারে এমত অবস্থায় জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করা জায়েজ আছে।

আর এই দুইটি কারণেই জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে মোলবি মাওলানা বলেছেন, এবং তারা এও বলেছেন এই দুইটি কারণে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে কিন্তু খাওয়ানো পরানো কথা ভেবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা জায়েজ নেই এটি হারাম কাজ। এবং ইসলামের যৌক্তিক কারণে, শরিয়া সম্মত কারণে জন্ম নিয়ন্ত্রণের অবকাশ রয়েছে। তাহলে আশা করছি জেনে গেছেন ইসলামের জন্ম নিয়ন্ত্রণ কি জায়েজ আছে কিনা এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।

জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

আপনি যদি না জানেন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কি তাহলে পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে জেনে নিন। জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হলো বিয়ের পর বাচ্চা না নেয়াকে বোঝায়। বিয়ের পর স্বামী স্ত্রীর দৈহিক মিলনের ফলে একজন স্ত্রীর গর্ভে সন্তান জন্ম নেয়। আর এই সন্তান জন্ম নেয়াকে বন্ধ করাকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বলা হয়ে থাকে। আর এই পোস্টের মধ্যে এই জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো কত রকম ভাবে করা যায় সেই সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। 

যেমন মনে করেন মিলন করার ফলে বাচ্চা গর্ভে জন্ম নেয় কিন্তু কি এমন ব্যবহার করলে স্ত্রীর গর্ভে বাচ্চা জন্ম নিবে না এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাছাড়া এই পোস্টটি পড়লে আরো জানতে পারবেন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করলে ইসলামে কি বলা হয় সেই সম্পর্কেও জানতে পারবেন। আপনি যে দেশে বাস করছেন সেই দেশের জনসংখ্যা অনুযায়ী সরকার কৃতক আদেশ হলো জন্মহার কমানো। 

কারণ বাংলাদেশের জনসংখ্যা অধিক পরিমাণে থাকার কারণে সরকার না পাচ্ছে বেকারত্ব দূর করতে না পারছে ক্ষুধা মুক্ত দেশ গড়তে। তাই পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর তৈরি করে প্রতিটি মানুষকে শেখানো হচ্ছে "একটি হলে ভালো হয় দুইটির বেশি নয়" এরকম একটা স্লোগান দেয়ার মাধ্যমে বাচ্চা নেয়া কমিয়ে দিচ্ছে।  উপরোক্ত সমস্ত তথ্য পড়ার মাধ্যমে আশা করি জেনে গেছেন ইসলামে জন্ম নিয়ন্ত্রণ কি জায়েজ আছে কিনা এই সম্পর্কে। তাহলে এখন জানুন কিভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেই সম্পর্কে। 

জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কত প্রকার ও কি কি

উপরোক্ত তথ্যগুলো পড়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কি বা জন্ম নিয়ন্ত্রণ কি। তাহলে এখন জেনে নিন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কত প্রকার ও কি কি মানে কত রকম ভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ করা যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন। বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর থেকে স্থায়ী ও অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ৭ টি ঘোষণা করেছেন। আর সেগুলো হল।

আরো পড়ুনঃ মেয়েদের উত্তেজনা করার নিয়ম 

১। খাবার বড়িঃ খাবার বাড়ি হলো জন্মনিয়ন্ত্রণের একটি ওষুধ। এটি আপনি জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য স্থায়ীভাবে খেতে পারেন আবার অস্থায়ীভাবে কয়েকদিনের জন্যও খেতে পারেন। এছাড়াও এই খাবার বড়ি গুলো নিয়মিত বা স্থায়ীভাবে খেলে  আপনার মাসিককে নিয়মিত করবে। জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য খাবার বড়ির মধ্যে একটি ওষুধের নাম হল ফেমিকন।

২। কনডমঃ জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য কনডম একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি সহবাসের সময় আপনার জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। আপনি যখন আপনার সঙ্গিনীর সাথে বা আপনার বউয়ের সাথে সহবাসে লিপ্ত হবেন তখন আপনার বীর্য বা শুক্রানো যেন আপনার সঙ্গিনীর ডিম্বানু বা যৌনাঙ্গে প্রবেশ না করে তার জন্য আপনার লিঙ্গে কনডম ব্যবহার করে নিবেন। তাহলে আপনার বীর্যগুলো আপনার সঙ্গিনের যৌনাঙ্গের না প্রবেশ করে কনডমে থেকে যাবে। এর দ্বারা আপনার জন্ম নিয়ন্ত্রণ হয়ে যাবে বা আপনার সঙ্গিনীর গর্বের কোন সন্তান জন্ম নিবে না।

৩। জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশনঃ বাংলাদেশ সরকার কৃতক জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন প্রদান করা হয়েছে। এই ইনজেকশন এর মাধ্যমে জন্মনিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আপনি চাইলে যে কোন প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়ে জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য ইনজেকশন গ্রহণ করতে পারেন। 

৪। ইমপ্ল্যান্টঃ ইমপ্ল্যান্ট হল এক থেকে দুই রড বিশিষ্ট ছোট ছোট নরম চিকন ক্যাপসুল যা একজন মহিলার বাহুর ভিতরে এবং ত্বকের নীচে স্থাপন করা হয়। ইমপ্ল্যান্ট গ্রহণকারী মহিলাদের প্রথম বছর প্রতি ১০০০ এ ১ জন মহিলা গর্ভধারন হতে পারে।

৫। আইউডিঃ আইইউডি হলো নারীদের জরায়ুতে স্থাপন উপযোগী একটি দীর্ঘ মেয়াদী অস্থায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। যা বাংলাদেশে সরকারের কার্যক্রমে ব্যবহৃত আইইউডি'র নাম কপার-টি ৩৮০-এ। আর এই আইউডি সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে এটির কাজ (৯৯.৯৯%)।

৬।ভ্যাসেকটমিঃ ভ্যাসেকটমি হলো পুরুষ নির্বীজকরণ বা স্থায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি নির্বাচনী অস্ত্রোপচার পদ্ধতি। প্রক্রিয়া চলাকালীন, পুরুষ ভ্যাসা ডিফারেনশিয়া কেটে এবং বাঁধা বা সিল করা হয় যাতে শুক্রাণু মূত্রনালীতে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকে এবং এর ফলে যৌন মিলনের মাধ্যমে একটি মহিলার নিষিক্তকরণ রোধ হয়।

৭। টিউবেকটমিঃ ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমে টিউবেকটমি। ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমে ডিম্ববাহী নালীতে স্প্রিং-ক্লিপ বা ফেলপ-রিং আটকিয়ে দিয়ে ডিম্ববাহী নালী পথকে বন্ধ করে দেয়া হয়, ফলে নালীপথের ধারাবাহিকতা বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশে এই পদ্ধতিতে কোথাও কোথাও টিউবেকটমি করা হয়।

জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কোনটা ভালো

এতক্ষণ জেনে আসলেন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকগুলো ধারণা এবার জানুন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সবচেয়ে কোনটি ভালো ও উপকারজনক। জন্মনিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরী পদ্ধতি হলো পুরুষদের জন্য ভেসে টমি (৯৯.৮৫% সাফল্যের হার) এবং মহিলাদের জন্য টিউবাল বন্ধ্যাকরণ (৯৯.৫% সাফল্যের হার) এবং টিউবেকটমি। 

আরো পড়ুনঃ যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়

এ পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে মুখে খাবার ওষুধ, প্যাচ, যৌন আংটি এবং ইনজেকশন সহ হরমোন জনিত জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। তাহলে আশা করছি এতক্ষণে জেনে গেছেন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে ভালো এবং কার্যকরী। এবং আশা করছি এও জেনে গেছেন ইসলামে জন্ম নিয়ন্ত্রণ কি জায়েজ আছে কিনা।

সর্বশেষ পোস্ট লেখকের মন্তব্য

এতক্ষণ যে পোস্টটি পড়ছিলেন সেই পোস্টটি হল ইসলামে জন্ম নিয়ন্ত্রণ কি জায়েজ আছে কিনা সম্পর্কে। পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে জন্ম নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তার বিস্তারিতভাবে তথ্য পেয়ে গেছেন। 

তাহলে পোস্টটি যদি আপনার কাছে একটুও ভালো লেগে থাকে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন তাহলে তারাও ইসলামে জন্ম নিয়ন্ত্রণ কি জায়েজ আছে কিনা এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে। এমনকি এই সম্পর্কিত আরো পোস্ট করতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url