ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ২০২৪ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রধান খাদ্য হলো ভাত আর এ ভাত উৎপাদন হয় ধান থেকে। তাই আজকের আর্টিকেলটি ধান সম্পর্কে। ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান কততম এটা জানানোর জন্যই আজকের আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে। ২০২৪ সালে এসে ধান উৎপাদনে বাংলাদেশর অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
এছাড়াও এই আর্টিকেল এর মধ্যে ধান নিয়ে যত তথ্য আছে সমস্ত তথ্যগুলো উপস্থাপন করা হবে। আপনি যদি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে পারেন তাহলে ধান নিয়ে আপনার যত অজানা তথ্য আছে সমস্ত তথ্যগুলো জানতে পারবেন। তাই দেরি না করে চলুন ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান কততম এই সম্পর্কে জানা যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ২০২৪
- ধান কি
- ধান চাষের উপকারিতা কি
- কোন জাতের ধান উপকার জনক
- কোন কোন মৌসুমে ধানের চাষ হয়
- বিশ্বের কোন কোন দেশের ধান চাষ করা হয়
- ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান কততম
- কৃষক কেন ধানে চাষের ওপর জীবিকা নির্বাহ করে
- পোস্ট সম্পর্কে রাইটারের মন্তব্য
ধান কি
ধান কি আমরা সবাই জানি। তারপরও আমি আরেকবার বলে দিচ্ছি ধান হলো বেঁচে থাকার অপর নাম।আমাদের যে জাতীয় খাবার বা প্রধান খাদ্য ভাত সেই ভাত সংগ্রহ করা হয় এই ধান থেকে। কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যম দিয়ে আমরা এই ধান পেয়ে থাকি। আর এই ধানকে আমরা চাল করে ভাত রান্না করে খাই। ধান কি এই সম্পর্কে আশা করি মোটামুটি একটি স্বচ্ছ ধারণা পেয়ে গেছেন।
ধান চাষের উপকারিতা কি
বিশ্বে ধান চাষের উপকারিতা অনেক। ধান চাষের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রধান যে
খাদ্য সে খাদ্যটা গ্রহণ করে থাকি। ধান চাষের মাধ্যমে অনেক কিছু তার জীবিকা
নির্বাহ করে থাকে। প্রতি মৌসুমে যে ধান চাষ হয় সে ধান চাষ করে অনেক কৃষক তার
পরিবার পরিচালনা করে। ধান চাষের মাধ্যম দিয়ে পৃথিবীর বা বিশ্বের মানুষ
খাদ্যের মধ্যে প্রধান খাদ্যশস্য গ্রহণ করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ হাঁস পালনের পদ্ধতি
বিশ্বের প্রায় কয়েকটি দেশের মধ্যেই প্রচুর পরিমাণে ধান চাষ করা হয়। যার
মধ্যে চীন দেশ প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদন করে থাকে। তাই চীনকে ধান
উৎপাদনকারী দেশ বলা হয়। বিশ্বে ধানের অনেক রকমের জাত আছে। একেক রকম জাতে
এক এক রকমের ধান পাওয়া যায়। অনেকেই জেনে থাকতে পারেন কালো ধানে প্রচুর
পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায়। যে প্রোটিন গ্রহণ করলে মানুষের দেহের অনেক
উপকারিতা আসে।
তাই প্রতিটি দেশকে ধান চাষে বেশি অগ্রগতি দেখাতে হবে। এখন প্রায় অনেক বিল
থেকে ধান চাষ উঠে যাচ্ছে। কারণ একটাই বিল কেটে পুকুর তৈরি। আর এই পুকুর
তৈরির মাধ্যমে অনেক ফসলে জমি নিধন হয়ে যাচ্ছে। আর তাই বিশ্বে চালের পরিমাণ
কিছুটা হলেও কম হয়েছে। তাই প্রধান খাদ্যশস্য উৎপাদনের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে
যেতে হবে।
কোন জাতের ধান উপকার জনক
বিশ্বে প্রায় ৪৮ জাতের ধান চাষ করা হয়। তার মধ্যে সবচেয়ে লাভজনক ধান হল ব্রি ধান ২৮। এই জাতের ধানে সর্বোচ্চ ফলন পাওয়া যায় এবং এই ধানের চাল অত্যন্ত সুন্দর ও খাওয়ার উপযোগী। বোরো মৌসুমে প্রতিটি দেশের যে পরিমাণ এ ধান চাষ করা হয় তার মধ্যে ৪৫% জমিতে এই জাতের ধানটি চাষ করে থাকেন কৃষকরা। এই ধানের জাতটিতে অধিক পরিমাণ ফলন এবং ব্যাপক চাষাবাদের কারণে বিজ্ঞানীরা এই ধানের জাতটিকে মেগা ভ্যারাইটি বলে থাকেন। কোন জাতের ধান সবচেয়ে বেশি লাভজনক আশা করি জানতে পেরেছেন।
আরো পড়ুনঃ ২০২৩ সালের চাকরির বিজ্ঞপ্তি
আপনার সুবিধার্থে নিম্নে কিছু ধানের জাত ও প্রতি হেক্টরে কত টন ধান উৎপাদন হয়
সে সম্পর্কে মোটামুটি একটি ধারণা দেয়া হলো।
- বি আর-১ চান্দিনা আউশ = প্রতি হেক্টরে ৪.0-৫.৫ টন ধান উৎপাদন হয়
- বি আর-২ মালা আউশ = প্রতি হেক্টরে ৪.0-৫.০ টন ধান উৎপাদন হয়
- বি আর-৩ বিপ্লব আউশ/আমন = প্রতি হেক্টরে ৪.0-৬.৫ টন ধান উৎপাদন হয়
- বি আর-৪ বিসাইল আমন = প্রতি হেক্টরে ৫.০ টন ধান উৎপাদন হয়
- বি আর-৫ দোলাভোগ আমন = প্রতি হেক্টরে ৩.০ টন ধান উৎপাদন হয়
- বি আর-৬ বোরো/আউশ = প্রতি হেক্টরে ৩.৫-৪.৫ টন ধান উৎপাদন হয়
- বি আর-৭ ব্রি-বালাম আউশ = প্রতি হেক্টরে ৩.৫-৪.৫ টন ধান উৎপাদন হয়
- বি আর-৮ আশা আউশ = প্রতি হেক্টরে ৫.0-৬.0 টন ধান উৎপাদন হয়
- বি আর-৯ সুফলা আউশ = প্রতি হেক্টরে ৫.0-৬.0 টন ধান উৎপাদন হয়
- বি আর-১০ প্রগতি আমন = প্রতি হেক্টরে ৫.৫ টন ধান উৎপাদন হয়
কোন কোন মৌসুমে ধানের চাষ হয়
এবার হলো বোনা আমন। চাষযোগ্য জমিতে চৈত্র-বৈশাখ মাসের দিকে ধানের বীজ রোপন করা হয়। এবং এই মৌসুমের ধান অগ্রহায়ণ মাসের দিকে পেকে যায় তারপর কৃষকরা সেই ধান কেটে ফেলেন। কোন কোন মৌসুমের ধান চাষ করা হয় আশা করি এই সমস্ত ব্যাপার গুলো আর জানতে পেরেছেন।
বিশ্বের কোন কোন দেশের ধান চাষ করা হয়
বিশ্বের মধ্যে প্রায় অনেকগুলো দেশেই ধান চাষ হয়। তার মধ্যে সর্বোচ্চ ধান
উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে চীনকে গণনা করা হয়। এবং দ্বিতীয় নাম্বারে আছেন আমাদের
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এই দেশেও প্রায় অধিক পরিমাণে ধানের চাষ করা হয়। ধান
উৎপাদনকারী দেশগুলো হলো।
- চীন
- জাপান
- ভারত
- ইন্দোনেশিয়া
- বাংলাদেশ
- নেপাল
- উত্তর কোরিয়া
- দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি
ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান কততম
ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়ার জন্য আমাদের আজকের এই পোস্টটির সম্পূর্ণ বিস্তারিতভাবে পড়ে নিন। এখন আপনি এতোটুকু পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান কততম। এমনকি সারা বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ ধান উৎপাদন করে প্রতিবছর কত পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।
আমাদের বাংলাদেশের ধান চাষের অবস্থান তৃতীয় নাম্বারে।বিশ্বের মধ্যে শীর্ষ ধান উৎপাদনকারী দেশ হলো চীন। এবং দ্বিতীয় নাম্বারে আছেন আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। ধান উৎপাদনের শীর্ষে থাকা দেশটিতে প্রতি বছর প্রায় ১৪ কোটি ৮৫ লাখ টন ধান উৎপাদন করে থাকে। এছাড়াও আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রতি বছর প্রায় ১১ কোটি ৬৪ লাখ টন ধান উৎপাদন করে থাকে। এবং ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়।
আরো পড়ুনঃ ধান চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
আর এই আমাদের দেশে ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী আমাদের বাংলাদেশ ২০১৯–২০ অর্থবছরে ৫ কোটি ২৬ লাখ টন ধান উৎপন্ন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অবদানে কৃষিখাতে উন্নতি করার ক্ষেত্রে ২০২৩-এ সে আমাদের দেশ বিশ্বে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে ধান উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে। উপরোক্ত তথ্য দ্বারা ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান কততম আশা করি জানতে পেরেছেন।
আশা করছি উপরোক্ত সমস্ত তথ্য গুলো পড়ার মাধ্যমে ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান কিরূপ রয়েছে এই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে গেছেন। এখন আপনি জানবেন কৃষক কেন ধানের ওপর জীবিকা নির্বাহ করে তাদের জীবন ব্যবস্থা পরিচালনা করছে এই সম্পর্কে।
কৃষক কেন ধানে চাষের ওপর জীবিকা নির্বাহ করে
বাংলাদেশে এখনো অনেক কৃষক আছে যারা কিনা ধান চাষের ওপর নির্ভরযোগ্য। অন্য
কোন কাজ করতে না পারায় তাদের প্রতি মৌসুমে ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতে
হয়। এমনও অঞ্চল আছে যে সমস্ত অঞ্চলগুলোতে দুই মৌসুমে শুধু ধান উৎপাদন করা হয়।
সেই সব অঞ্চলগুলোতে অন্য কোন চাষাবাদ হয় না। সেক্ষেত্রে অঞ্চল ভেদে অনেক
কৃষক ধান চাষের উপর জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। কৃষক কেন ধান চাষের উপর জীবিকা
নির্বাহ করে আশা করি জানতে পেরেছেন।
পোস্ট সম্পর্কে রাইটারের মন্তব্য
এতক্ষণ যে পোস্টটি পড়লেন সেই পোস্টটি হলো ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান
সম্পর্কে লেখা হয়েছে। আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার পর আশা করি আপনার
প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। এই আর্টিকেলের মধ্যে ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের
অবস্থান কততম সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। পোস্টটি
আপনার কাছে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
এছাড়াও এমন আরো অনেক অজানা তথ্যগুলো জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত
ভিজিট করতে থাকুন। ধন্যবাদ।
ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url