কলা খাওয়ার উপকারিতা - কলা খাওয়ার নিয়ম
প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটি একটি পুষ্টিকর খাবার কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং কলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। এই পোষ্টের মধ্যে কলা সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য উপস্থাপন করা হবে। তাই এ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি জানতে পারবেন কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং কলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
এছাড়াও এই পোষ্টের মধ্যে কলা চাষের পদ্ধতিগুলো জানা হবে এমনকি কলা কত রকমের জাত আছে সেই সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হবে। তাই দেরি না করে চলুন আর্টিকেলটি পড়া শুরু করা যাক এবং জেনে নেওয়া যাক কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং কলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা - কলা খাওয়ার নিয়ম
- কলা চাষ পদ্ধতি
- কলা চাষের আধুনিক পদ্ধতি
- কলার বিভিন্ন জাতের নাম
- কলার উপকারিতা ও অপকারিতা
- কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা
- পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা
- পোস্ট সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
কলা চাষ পদ্ধতি
কলা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে এখন বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। অনেকেই সঠিক নিয়মে
কলা চাষ কিভাবে করতে হয় সেই নিয়ম কানুন গুলো জানেনা আজকে তাদের জানানোর জন্য এই
পোস্টটি লেখা হয়েছে। এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে পারলে আপনি একজন কলা
চাষী হয়ে যেতে পারবেন। তাই মনোযোগ সহকারে পোস্টটি পড়ুন এবং জানুন কলা চাষ
পদ্ধতি বা কলা কিভাবে চাষ করতে হয়।
কলা চাষ করার জন্য সর্বপ্রথম যে বিষয়টি নির্বাচন করতে হয় সেটি হচ্ছে কলার চারা এবং চাষযোগ্য জমি। কলা চাষের জন্য তিন মাস বয়সী সুস্থ সবল ওসি চারা গুলো খুবই ভালো। জমিতে চারা রোপণের আগে ভালোভাবে গভীর করে চাষ দিয়ে দুই থেকে তিন বার চাষ করে জৈব সার ছিটিয়ে নিতে হবে। এবং চাষকৃত জমিটি কয়েক দিন রোদে ফেলে রাখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
এরপর চারা রোপণের সময় ২ মিটার করে দূরত্ব রেখে ৬৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য প্রস্থ ও গভীর করে গর্ত তৈরি করে নিতে হবে। এমনকি প্রতিটি গর্তে কলা গাছের চারা লাগানোর সময় গোবর এবং টিএসপি ইউরিয়া সার ছিটিয়ে গর্তগুলো ভরাট করে দিতে হবে। আশা করি কলা চাষ করার জন্য কিছুটা ধারণা পেয়ে গেছেন।
কলা চাষের আধুনিক পদ্ধতি
এতক্ষণ জানলেন সাধারণ কলা কিভাবে চাষ করতে হয়। এবার জানবেন আধুনিক সময়ে আধুনিকভাবে কিভাবে কলা চাষ করতে হয়। কলা চাষের জন্য বিভিন্ন ধরনের নিয়ম কানুন আছে তার মধ্যে একটি নিয়ম আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করা হলো। আশা করি এই নিয়ম অনুসারে কলা গাছ রোপন করে চাষ করলে অধিক ফলন পাওয়া যাবে। তাই আধুনিক উপায়ে কলা চাষ পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।
একইভাবে কলা চাষের জন্য আপনাকে রোগমুক্ত করার গাছের চারা এবং বন্যা মুক্ত চাষযোগ্য জমি নির্বাচন করে নিতে হবে। কারণ চারা এবং জমি নির্বাচনের বিকল্প নেই। আপনাকে কলা গাছের চারা এমনভাবে নির্বাচন করতে হবে যে যারা গুলো রোগ মুক্ত সবসময় থাকে। যেমন তিন মাস বয়স্ক সুস্থ সবল রোগ মুক্ত কলা গাছগুলো সংগ্রহ করতে পারেন। এমনকি জমি চাষ করার সময় গোবর সার ছিটিয়ে চাষ করতে হবে। তারপর কলাগাছ রোপন করার জন্য গর্ত করে সেই গর্তে চারা লাগানোর সময় গোবর এবং টিএসপি দিয়ে ভরাট করে দিতে হবে।
কলা গাছ রোপনের দেড় মাস থেকে দুই মাস পর চার ভাগের একভাগ ইউরিয়া অর্ধেক এমপি ও বাকি অর্ধেক পিএসপি জমিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। এমনকি জমিটি ভালোভাবে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে দিতে হবে। জমি কোপানোর কারণ হলো যে সমস্ত সারগুলো প্রয়োগ করলেন সেই সমস্ত সারগুলো জানে মাটির সাথে মিশে যায়। আশা করি কলা চাষের আধুনিক পদ্ধতিতে জানতে পেরেছেন। এই পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে যদি কলা চাষ করেন তাহলে অধিক তরফ ফলন পাওয়া যাবে।
কলার বিভিন্ন জাতের নাম
এতক্ষণ জানলেন কলা চাষের পদ্ধতি এবার জানবেন কত ধরনের কলা জাত আছে সে জাতগুলো
নাম সম্পর্কে। আমরা বাজারে দেখে থাকি বিভিন্ন ধরনের কলা আসলে এই সমস্ত কলা
গুলো এক একটা এক এক রকম জাতের আজকে সেই জাতগুলোর নাম সম্পর্কে কিছুটা ধারণা
দেওয়া হবে। বিভিন্ন কলা জাতের নাম।
কয়েকটি সম্পূর্ণ বীজমুক্ত কলার জাতের নামঃ
- সবরি কলা
- অমৃতসাগর কলা
- অগ্নিশ্বর কলা
- দুধসর কলা
- দুধসাগর কলা
- চাম্পা কলা
- চিনিচাম্পা কলা
- কবরী কলা
- চন্দন কবরী কলা
- জাবকাঠালী কলা
- বতুর আইটা কলা
- গোমা কলা
- সাংগী আইটা কলা
কলার উপকারিতা ও অপকারিতা
কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। অনেকের পছন্দের খাবার বা ফল এই কলা। এই কলার দামে
কম কিন্তু মানের দিক দিয়ে অনেক। কলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন পাওয়া যায় যা
শরীরের খুবই উপকারে আসে। শরীর সুস্থ থাকায় জন্য কলার কোন বিকল্প নেই। এই
কলার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন মিনারেল ফাইভার ইত্যাদি এই সমস্ত সকল উপাদান গুলো
দেহের জন্য খুবই উপকারী।
কলার অপকারিতা সম্পর্কে বলতে গেলে তেমন কোন অপকারিতা কলার মধ্যে এখনো পাওয়া
যায়নি। তবে যদি কলা খালি পেটে খাওয়া যায় তাহলে কলার অপকারিতা দেখা যাবে। তাই
অবশ্যই কলা খালি পেটে না খেয়ে শুকনো কিছু খাবার খেয়ে কলা খাবেন তাহলে অপকারের
চেয়ে অপকারিতা অনেক পাওয়া যাবে। আশা করি কলার উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে গেছে এবার জানুন কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা
সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা
কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। কলা শুধু পাকা খেলে উপকারিতা আছে এমনটা না
কাঁচা কলাতেও অনেক উপকার। কাঁচা কলার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান
এই কাঁচা কলা মূলত সবজি হিসেবে খাওয়া হয় এই কাঁচা কলার মধ্যে ভিটামিন এ,
ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফেট প্রোবায়োটিক ইত্যাদি পাওয়া
যায়। এখন জানবেন কাঁচা কলা খাওয়ার কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে।
- কাঁচা কলার ভর্তা অনেক উপকার শরীরের জন্য। এই কাঁচা কলার মধ্যে থাকা ফাইভার অনেকক্ষণ পেটকে ভরিয়ে রাখে। এতে সহজে ক্ষুধা লাগে না এটি দ্বারা সহজেই ওজন কমানো যায়।
- কাঁচা কলা খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কাঁচা কলা খাওয়ার ফলে আমাশার রোগ আরোগ্য হয়।
- রক্তের শর্করা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রাখতেও এই কলার ভর্তা অনেকটাই সাহায্য করে থাকে মানুষের শরীরে
- মানুষের শরীরের ডায়রিয়া ও পেটের নানা সমস্যা দূর করার জন্য এই কাঁচা কলা খুবই কার্যকর।
- নিয়মিত যদি প্রতিদিন কাচা কলা খাওয়া যায় তাহলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায় কারণ এতে রয়েছে পটাশিয়াম হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে অনেকটাই সাহায্য করে
- এছাড়াও এই কাঁচা কলা কুলন সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ দূর করতে সাহায্য করে এবং কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধও এটি বেশ কার্যকর হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা
উপরোক্ত তথ্য দ্বারা জানতে পারলেন কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা এখন জানবেন পাকা
কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা।
আরো পড়ুনঃ খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
- পাকা কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম যা দেহের পটাশিয়াম এর চাহিদা পূরণ করতে প্রতিদিন একটি করে কলা খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা আপনার শরীরে অনেকটাই উপকারে আসবে।
- আমরা জানি কলা একটি মিষ্টি ফল তবে মিষ্টি হল সুগার বাড়ায় না এ ফলটি এই কলার জিআই ভ্যালু খুব ভালো হওয়ার কারণে ডায়াবেটিসের রোগীরাও এটি খেতে পারেন নিশ্চিন্তে।
- কলার মধ্যে আরও আছে ক্যারোটিনইয়েড ও আন্টি অক্সিডেন্ট এগুলো দেহের জন্য খুবই উপকারী।
- এমনকি পাকা কলা পেট পরিষ্কার রাখে পাশাপাশি হজম শক্তিও বাড়ায়। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা হজম শক্তি বাড়ানোর কাজে আসে।
- এই পাকা কলার মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম এর পাশাপাশি রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম আর এই দুই ধরনের উপাদানই দেহের হারকে অনেক শক্ত করতে পারে
- এমন কি এই পাছা কলার মধ্যে ফাইবার থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর করে থাকে।
- নিয়মিত কলা খাওয়ার ফলে অনেক পুরুষের যৌন ক্ষমতা বেড়ে যায়।
- মানুষের দেহের এনার্জি বা শক্তি বাড়ানোর জন্য রয়েছে এর অনেকগুলো অবদান। শরীরের মধ্যে দুর্বলতা দেখা দিলেই কলা খাবেন তাহলে সমস্ত দুর্বলতা দূর হয়ে যাবে।
পোস্ট সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
এতক্ষণ যে পোস্টটি পড়লেন সেই পোস্টটি হল কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং কলা খাওয়ার
নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। আশা করি এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে কলা নিয়ে
যত প্রশ্ন ছিল সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। আপনার কাছে এই পোস্টটি যদি
একটুও ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন তাহলে তারাও এই
কলার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবে। এমনকি এরকম আরো অনেক তথ্য
জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করতে থাকুন। ধন্যবাদ।
ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url