মাসিক না হওয়ার কারণ - মাসিক না হলে করণীয়

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটি মেয়েদের মাসিক না হওয়ার কারণ সম্পর্কে। প্রায় ৮ বছরের উর্ধ্বে যত মেয়ে আছে সবাই এই মাসিক নামক শব্দটির সাথে পরিচিত। অনেক মেয়ে আছে গম্ভীর কারো সাথে কোন কথা বলে না। এমনকি তার নিজের সমস্যার কথা কারো সাথে শেয়ার করে না। 

masik

সেই সমস্ত মেয়েদের টার্গেট করে আমাদের আজকের এই পোস্টটি লেখা। তাই এ পোস্টটি মনোযোগ সহকারী পড়লে মেয়েদের মাসিক না হওয়ার কারণ গুলো কি কি জানতে পারবেন।  এছাড়াও এই পোষ্টের মধ্যে মেয়েদের নিয়মিত মাসিক না হওয়ার কারণ গুলো ব্যাখ্যা করা হয়েছে।  মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি যেটি খুঁজছেন বা যদি জানতে চাইছেন আশা করি পেয়ে যাবেন। 

সমস্ত পোস্ট জুড়ে সূচিপত্রঃ মাসিক না হওয়ার কারণ এবং মাসিক না হলে করণীয়

মাসিক না হওয়ার কারণ

প্রতিটি মেয়ের কাছে মাসিক একটি পরিচিত শব্দ। প্রতিটি মেয়ের মাসে একবার করে মাসিক হয়। মেয়েদের নিয়মিত মাসিক হওয়া অত্যন্ত ভালো। আমরা জানি প্রতিটি মেয়ের ২৮ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে পিরিয়ড বা মাসিক হয়ে থাকে। এটি হয় ১২ থেকে ৫৫ বছর বয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর ক্ষেত্রে সময়মতো মাসিক হওয়াটা সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ বলা যায়। আর যদি অনিয়মিত মাসিক হয় তাহলে বুঝে নিতে হবে তার শারীরিক কোন সমস্যা আছে।

আরো পড়ুনঃ নিয়মিত মাসিক না হলে কি করবেন

এক্ষেত্রে শরীরে কোন অসুস্থতা ভর করেছে কিনা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিশ্চিত হতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় শরীরে পুষ্টির অভাবে মেয়েদের মাসিক হয় না। তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে পারলে এ ধরনের সমস্যা হতে বাচা যাবে। মেয়েদের পিরিয়ড চলাকালীন অবস্থায় সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শরীরের থাকতে হবে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় অসচেতনার অভাবে মেয়েদের নিয়মিত মাসিক হয় না। মাসিক না হওয়ার কারণ গুলো কি কি আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

মাসিক না হলে কি সমস্যা হয়

মেয়েদের পিরিয়ড বা মাসিক হলো প্রাকৃতিক বিষয়। তবে মেয়েদের পিরিয়ড নিয়মিত হওয়া টা খুবই ভালো। পিরিয়ড একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এই পিরিয়ডের মাধ্যমে মেয়েদের গর্ভধারণ করায়। অনেক মেয়ে মা হতে পারে। তবে অনেকের অনেক ধরনের সমস্যা থাকে। বিশেষ করে অনেক মেয়ে অবিবাহিত রয়েছে যাদের মাসিক অনিয়মিত হয়। সেসব মেয়েদের মাতৃদের স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। এই সমস্যা না মেয়েরা চাইলেও মা বা গর্ভধারণ করতে পারে না। তাদের বন্ধ্যন্ত্বের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ

প্রায় ১০ জন মেয়ের মধ্যে ৬ জন মেয়েরই অনিয়মিত মাসিক হয়। অনেকের দেখা যায় দুই মাস ধরে কোন মাসিক হয় না। অনেক মেয়ে আছে অসচেতনা তাই থাকার কারণে তাদের পিরিয়ড ঠিক টাইম মত হয় না। তবে আরও অনেক কারণ আছে এই পিরিয়ড না হওয়ার। যেমন অনেক মেয়ে আছে দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকে,  আবার অনেকেই আছে অনেক বেশি কফি খেতে ভালোবাসে কফি বেশি পান করার মাধ্যমে মেয়েদের নিয়মিত মাসিক হয় না। 

আবার অনেকেই ক্যাফিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করে এই ক্যাফিন জাতীয় খাবার খাওয়ার মাধ্যমে অনেকের অনিয়মিত মাসিক হয়। আরো অনেক ধরনের কারণ আছে যেমন স্টেট নেয়া, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করা, অপরিচ্ছন্ন থাকা, মদ্যপান বা ধূমপান করা ইত্যাদি ধরনের কারণ হতে পারে। এ ধরনের সমস্যাগুলো টিনেজার বা মধ্যবয়সী মেয়েদের মধ্যে দেখা যায়। 

তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ

অনেক মেয়েদের দেখা যায় যে সময়ে মাসিক হওয়ার কথা সেই সময় মাসিক হচ্ছে না। মনে করেন আপনার জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখে মাসিক হয়েছে আবার ফেব্রুয়ারি মাসের ৫ তারিখে মাসিক হওয়ার কথা কিন্তু হয় নাই। এই যে এই সময়ের মধ্যে আপনার মাসিক না হওয়ার কারণ। মনোনিউক্লিওসিস, ঠান্ডা,সর্দি, গলার ইনফেকশন এ ধরনের সমস্যায় পিরিয়ড হতে দেরি হয়।

আরো পড়ুনঃ নিয়মিত মাসিক হওয়ার জন্য ব্যায়াম সমূহ

এর মানে হচ্ছে জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখে আপনার মাসিক হওয়ার পর আপনার এ ধরনের সমস্যা গুলো হয়েছিল যেমন গলার ইনফেকশন সর্দি ঠান্ডা লাগা মনোনিউক্লিয়াসের মতো অসুস্থ তাই আপনি অসুস্থ হয়ে গেছিলেন তাহলে আপনার ফেব্রুয়ারি মাসের ৫ তারিখে যে মাসিক হওয়ার কথা ছিল সেই তারিখে মাসিক হবে না। আশা করি বুঝতে পেরেছেন তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ গুলো কি কি।

অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ

অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ গুলো কি কি জেনে নেয়া যাক। অনেক সময় দেখা যায় মেয়েদের মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ পুষ্টির অভাব। মেয়েদের শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দিলে তাদের মাসিক সম্ভাবনা কমে যায়। 

মেয়েদের মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ ডিম্বাশইয়ের ত্রুটি বা সিস্ট, হরমোনের তারতম্য জনিত সমস্যা আর যেটা বললাম অপুষ্টি। এই অপুষ্টি মানে কেবল ভগ্ন স্বাস্থ্য নয় শারীরিক স্থলতা বা অতিরিক্ত মোটিয়ে যাওয়াও অপুষ্টির লক্ষণ। অনেক সময় দেখা যায় সন্তান প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়।

মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে

প্রতিটি মেয়ের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হচ্ছে মাসিক ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড। অনেক মেয়েই আছে কিশোরি বয়সেই মাসিক নিয়ে চিন্তাই শেষ হয়ে যায়। তাই তাদের মাসিক সম্পর্কে একটি ধারা নেয়ার জন্য পরিবারের সদস্যদের পরামর্শ নেয়া উচিত। কেননা মাসিক হচ্ছে মাতৃত্বের অভিচ্ছন্ন অংশ। কোন মেয়েরই মাসিক ছাড়া মা হওয়া সম্ভব নয়। অনেক মেয়ে আছে অনলাইনে সার্চ করে দেখতে চান যে মাসিক না হলে বাচ্চা হওয়ার কি সম্ভাবনা আছে। 

 মেয়েদের মাসিক না হলে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। একটি কিশোরী মেয়ের যখন বিয়ে হয় বিয়ের পর তার স্বামীর সাথে মিলনের মাধ্যমে পুরুষের শুক্রানু মেয়েদের ডিম্বাণুতে প্রবেশ করে। নারীর যৌনপথের ফেলোপিয়ান টিউবে এই নিষ্কৃত ডিম্বাণু ও শুক্রাণু সংযুক্ত হওয়ার অর্থ নারী গর্ভবতী। এর ফলে নারীর গর্ভে সন্তান যতদিন না প্রসব হবে নারীর মাসিক হবে না। তাই সাধারণভাবে মেয়েদের মাসিক না হলে বোঝা যায় যে মেয়েটি গর্ভবতী।

নিয়মিত মাসিক না হলে করণীয় কি

নিয়মিত মাসিক না হয় দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। সমস্যা থাকলে সমস্যার সমাধান আছে তাই সমস্যা নিয়ে বসে থাকলে চলবে না এর সমাধান বের করতে হয়। এখন বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে সেই সমস্ত পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করে আপনার অনিয়মিত মাসিকে নিয়মিত করুন। নিয়মিত মাসিক না হলে আপনি বাদামী বর্ণের পিল খেতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়

না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। চিকিৎসক কি পরামর্শ দিচ্ছে সেই অনুযায়ী চলাফেরা করবেন এবং কি খেতে দিচ্ছে সেই মোতাবেক খাওয়া-দাওয়া করবেন। নিয়মিত সুষম প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে। তাজা মাছ-মাংস, শাক-সবজি এবং ফলমূল নিয়মিত খান। তাহলেই দেখবেন নিয়মিত মাসিক হচ্ছে।

সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয় কি

বিয়ের পর স্বামী স্ত্রীর সহবাসের পর যদি মাসিক না হয় অনেক মেয়ে  দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যান। স্বামী স্ত্রী যদি সন্তান না নিতে চায়, কিন্তু  তাদের সহবাস এরপর মাসিক না হয় তাহলে মেয়েরা দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। কারণ অনেকেই মনে করে সহবাসের পর মাসিক না হলেই মনে হয় প্রেগন্যান্ট। 

কিন্তু এটা 100% নিশ্চিততা দিয়ে বলা যায় না যে সহবাসের পর সময়মতো মাসিক হয় নাই তাই আপনি প্রেগন্যান্ট। কারণ অনেক মেয়ে আছে যাদের নিয়মিত মাসিক হয় না। তাই সহবাসের পর মাসিক নাও হতে পারে। সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয় কি সে ক্ষেত্রে আগে আপনি প্রেগনেন্ট কিনা জেনে নেবেন। এজন্য সহবাসে কতদিন পর প্রেগন্যান্ট হয় এটা জেনে নেয়া দরকার। 

আপনি সহবাসের ২১ দিন পর প্রেগন্যান্ট কিনা চেক করে নিবেন। তবে এই সময়ে রেজাল্ট হানডেট পারসেন কনফার্ম হয় না। তারপরও আপনি প্রেগন্যান্ট না এটি টেস্ট করে নিবেন। টেস্ট করার পর আপনার পরিচিত বা কোন গাইনোলজিস্ট এর কাছে পরামর্শ নিন। 

আপনি যদি মনে করেন ভুল ভবিষ্যৎ বা অনাকাঙ্খিতভাবে আপনি প্রেগন্যান্ট হয়ে গেছেন। তাহলে আপনি কি করতে চাইছেন সেই গাইনোলজিস্ট এর সাথে পরামর্শ করুন। তিনি আপনাকে সঠিক ও সুন্দরভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করবে। মনে রাখবেন সহবাসের পর মাসিক না হলেই যে আপনি প্রেগন্যান্ট এটা কিন্তু নিশ্চিত না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিম সেন্টার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url